নিউইয়র্কে কাদের গনি চৌধুরী, ‘ফ্যাসিবাদ চিরদিনের জন্য বিদায় দিতে হবে’

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, ‘ছাত্র-জনতার রক্তে অর্জিত সাফল্য নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্র রুখতে হবে। বাংলাদেশ থেকে স্বৈরশাসন ও ফ্যাসিবাদ চিরতরে তাড়াতে হবে। দেশের মালিকানা জনগণকে বুঝিয়ে দিতে হবে। আমরা পূর্ণ গণতন্ত্র চাই। ভোটাধিকার চাই। স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চাই। গুম, খুন ও বিনাবিচারে হত্যার অবসান চাই। আইনের শাসন চাই। মানবাধিকার চাই। একটি মানবিক বাংলাদেশ চাই।’

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা ও মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

কাদের গনি চৌধুরী আরো বলেন, ‘পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনতে হবে। শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের বিচার করতে হবে। বিদ্যুৎ, কুইক রেন্টাল, মেগা প্রজেক্টের নামে দেশের অর্থ লুটেরাদের বিচার করতে হবে। ছাত্র ও গণহত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’

বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরীর যুক্তরাষ্ট্রে আগমন উপলক্ষ্যে প্রবাসী বাংলাদেশীরা এ সংবর্ধনা ও মত বিনিময় সভার আয়োজন করেন।

প্রাক্তন ছাত্রনেতা জাকির এইচ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন আরিফুল হক চৌধুরী, নজির আহমদ ভান্ডারী, আবদুর রহিম বাহার, জাহাঙ্গীর আলম, হারুনুর রশীদ, আব্দুল মান্নান, মাসুদ রানা, আহসান উল্লাহ মামুন, মোজাম্মেল হোসেন সোহাগ, শাহ আলম, মামুনুর রশীদ মামুন, হারুনুর রশীদ হারুন, মশিউর রহমান রুবেল।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রাক্তন ছাত্রনেতা নুর আলম ও আল মামুন সবুজ।

অনুষ্ঠানে কাদের গনি চৌধুরী আরো বলেন, ‘ভিন্নমতের লোকদের নির্যাতনের জন্য আওয়ামী লীগ আয়নাঘর বানিয়েছিল। যেখানে বিরোধী দলের নেতাদের চালানো হতো নিষ্ঠুর নির্যাতন। ক্রসফায়ারের নামে অসংখ্য বিরোধী দলের নেতা-কর্মীকে খুন করা হয়। বাসা থেকে ধরে নিয়ে ভিন্নমতের লোকদের ক্রসফায়ার ও তথাকথিত এনকাউন্টারের নামে গুলি করে খুন ছিল নিত্য দিনের ঘটনা। মানুষের বাক স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য মিডিয়ায় প্রচার করতে দেয়া হত না। তাকে অন্যায়ভাবে দেশে আসতে দেয়া হয়নি। খালেদা জিয়াকে এক কাপড়ে তার ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসাতো নিতে দেয়নি, উল্টো কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘১৭ বছর দেশে গণতন্ত্র বলতে কিছুই ছিল না। আজকে মুক্ত বাতাসে আমরা বাস করছি। কিন্তু, মনে রাখবেন, সেই পর্যন্তই মুক্ত থাকবে, যত দিন আমরা দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত রাখতে পারব। আমরা যদি আওয়ামী লীগের মতো শুরু করি, ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হবে। ফ্যাসিবাদী শক্তি ফের ফিরে আসবে। তাই, বিএনপি নেতা-কর্মীদের কাছে অনুরোধ, ঐক্যবদ্ধ থাকুন। জনগণের পাশে দাঁড়ান। মনে রাখবেন, বিএনপি জনগণের দল। দেশ ও জনগণের জন্য বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জিয়াউর রহমান। তাই, আমার অনুরোধ থাকবে জনগণের সেবক হিসেবে তাদের পাশে থাকুন। জনগণের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসুন। নিজেদের মানুষের কাছে প্রিয় বানান। কারো ওপর অন্যায়-অত্যাচার, নির্যাতন যাতে না হয়, সে বিষয়ে সজাগ থাকুন।’