শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

আপনি কি অলস? আলসেমি কিসের লক্ষণ, জানলে খুশি হয়ে যাবেন

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ১০ অক্টোবর ২০২৪ | ৩৭


‘অলস’ ব্যক্তিদের গড় আইকিউ শারীরিকভাবে সক্রিয়দের চেয়ে বেশি।

এক গবেষণায় সম্প্রতি দেখা গেছে, যাঁরা শুয়ে, বসে অলস সময় কাটাতে ভালোবাসেন, উচ্চ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তাঁদের গভীর যোগ রয়েছে। তাঁরা সহজে ‘বোর’ হন না। তাই ‘উত্তেজনা’র খোঁজে নানা ধরনের কর্মকাণ্ডেও নিজেদের নিয়োজিত রাখার প্রয়োজন তাঁদের পড়ে না। বরং নিরিবিলি চিন্তা করে সময় কাটাতে ভালোবাসেন। মস্তিষ্ককে বেশি ব্যবহার করেন। শুয়ে, বসে অলস সময় কাটানোর মধ্য দিয়ে তাঁরা মূলত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ভাবতে পছন্দ করেন।

শারীরিক নানা কাজে নিজেদের যাঁরা নিয়োজিত রাখেন, যেমন, ঘুরে বেড়ানো, আড্ডা দেওয়া, পার্টি করা, ক্লাব করা বা পেশাজীবনে শারীরিক পরিশ্রম—তাঁদের বুদ্ধিমত্তা তুলনামূলকভাবে কম। তাঁরা সহজে বিরক্ত হয়ে যান। বিভিন্ন কাজে নিজেদের নিয়োজিত রাখেন, কেননা, কিছু না করে সময় কাটানো তাঁদের জন্য বিরক্তিকর। তাঁরা সব সময় কিছু না কিছু করতে চান। বিভিন্ন শারীরিক কর্মকাণ্ড তাঁদের যুক্ত হওয়ার আরেকটি কারণ সমস্যা থেকে দূরে থাকতে চাওয়া।

ফ্লোরিডা গলফ কোস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. টড ম্যাকেলরয়ের নেতৃত্বে একটি দল গবেষণাটি পরিচালনা করেছে। ৩০ জন করে দুটি দলের মোট ৬০ জন সদস্যের ওপর পরিচালিত হয়েছে এই গবেষণা। এক দলকে ডাকা হয়েছে ‘থিঙ্কার’, আরেক দলকে ‘নন–থিঙ্কার’।

এই দুই দলের সদস্যরা শারীরিকভাবে কতটা সক্রিয় ছিল, স্মার্টওয়াচের মতো বিশেষ একটি ট্র্যাকার শরীরে বসিয়ে তা পরিমাপ করা হয়েছে। যাঁরা শারীরিকভাবে সক্রিয় ছিল, আর যাঁরা অলস সময় কাটিয়েছেন—এই দুই দলের ভেতর কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য পেয়েছেন গবেষকেরা।

যাঁরা শারীরিকভাবে কম সক্রিয়, অলস সময় কাটাতে ভালোবাসেন, তাঁদের আইকিউ বেশি হবার সম্ভাবনা বেশি (প্রতীকী ছবি)ছবি: কবির হোসেন
‘জার্নাল অব হেলথ সাইকোলজি’তে গবেষণাটি প্রকাশের পর বিশ্বব্যাপী সাড়া পড়ে যায়। এটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ গবেষণা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

তবে ড. টড ম্যাকেলরয় এ–ও বলেছেন, আপনি অলস, তার মানে আপনি বুদ্ধিমান—ঢালাওভাবে এরকম বলা যাবে না। তবে এটুকু স্পষ্ট যে যাঁরা শারীরিকভাবে কম সক্রিয়, অলস সময় কাটাতে ভালোবাসেন, তাঁদের আইকিউ বেশি হবার সম্ভাবনা বেশি। তাঁরা শারীরিক কর্মকাণ্ডে খুব একটা আগ্রহী না হলেও স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য যেটুকু প্রয়োজন, সেটুকু ঠিকই করেন। ড. টড ম্যাকেলরয় গবেষণাটি উপস্থাপন করে বলেন, ‘যাঁরা শারীরিক কাজে খুব একটা আগ্রহী নয়, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তাঁরা মস্তিষ্ককে কাজে লাগান বেশি। আর যাঁরা শারীরিক পরিশ্রম বেশি করেন, তাঁরা মস্তিষ্ককে কম কর্মক্ষম রাখেন।’

তবে একটা মজার ব্যাপার হলো, যাঁরা অলস থাকতে ভালোবাসেন, তাঁরা জীবনসঙ্গী হিসেবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই বেছে নেন এমন মানুষকে, যাঁরা শারীরিকভাবে কর্মক্ষম থাকতে ভালোবাসেন। অর্থাৎ, ‘থিঙ্কার’রা সঙ্গী হিসেবে ‘নন–থিঙ্কার’দের পছন্দ করেন। এর অবশ্য কোনো ব্যাখ্যা এই গবেষণায় দেওয়া হয়নি।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor