বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

শীত মৌসুমে দর্শনীয় স্থান

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ২৮ অক্টোবর ২০২৪ | ৩৯

বাংলাদেশে সৌন্দর্য একেক ঋতুতে একেক রকম। তবে পর্যটনের জন্য শীতের সময়টা সবচেয়ে উপযোগী। আর সে কারণে এ সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়ে যায়। শীতে পর্যটনের কিছু জনপ্রিয় জায়গার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন মোহনা জাহ্নবী

সেন্টমার্টিন
কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার একটি ইউনিয়ন। সাগর পাড়ি দিয়ে এই প্রবাল দ্বীপে যাওয়ার পথ শান্ত থাকে বলে শীতের সময় পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। যদিও বছরের অন্য সময়ও অনেক পর্যটক এ দ্বীপে ঘুরতে আসেন। এখানে ঘুরতে গেলে অদূরের ছেঁড়া দ্বীপও ঘুরে আসা যায়। সেন্টমার্টিনে অনেক আবাসিক হোটেল রয়েছে, এ ছাড়া একটি সরকারি ডাকবাংলোও আছে। পর্যটকদের জন্য এ দ্বীপ যথেষ্ট নিরাপদ।

নিঝুম দ্বীপ
এর অবস্থান নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলায়। স্থানীয়ভাবে এ চর ইছামতীর চর হিসেবেও পরিচিত। প্রচুর গাছপালা থাকার সুবাদে এ দ্বীপটি জাতীয় উদ্যান হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এখানে প্রচুর কেওড়া গাছ আছে। এ ছাড়া এ দ্বীপটি হরিণের অভয়ারণ্যের জন্যও সুপরিচিত। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে এ দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের খুব আকর্ষণ করে। এখানে পৌঁছানো কিছুটা ঝক্কির ব্যাপার হলেও এর নয়নাভিরাম সৌন্দর্য সভ ক্লান্তি দূর করে দেয়। ক্যাম্পিং করার জন্য এ দ্বীপ উপযুক্ত একটা স্থান।

মনপুরা
মনপুরা ভোলা জেলার একটি দ্বীপ উপজেলা। জেলা সদর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরত্বে এর অবস্থান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এ দ্বীপের মাধুর্যতা শীত মৌসুমে আরও বেড়ে যায়। দ্বীপে বসে সূর্যাস্ত উপভোগ করাটা বেশ মনোমুগ্ধকর হয় এই মৌসুমে। এখানে আউশ ও আমন ধানের ফলন হয়। প্রচুর ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। ঘন বনাঞ্চল এবং কিছু দিঘির সন্নিবেশ এ দ্বীপটির সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

কুয়াকাটা
এটি পটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। কুয়াকাটা সমুদ্রকন্যা হিসেবে পরিচিত। এখানের সমুদ্রতীর থেকে সূযোর্দয় এবং সূর্যাস্ত উভয়ই দেখার সুযোগ রয়েছে বলে এটি অধিক জনপ্রিয়। প্রায় সারা বছরই এখানে পর্যটকের আনাগোনা থাকে। শীত মৌসুমে সমুদ্র তুলনামুলক শান্ত থাকে বলে অনেকে সমুদ্র দেখার জন্য এ মৌসুমটাকেই বেছে নেয়। সমুদ্র ছাড়াও এখানে আরো অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে।

হাওর
মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ আর সিলেট জেলা নিয়ে গঠিত সিলেট বিভাগ। এসব জেলাজুড়ে রয়েছে টাঙ্গুয়ার হাওর, হাকালুকি হাওর, হাইল হাওর, শনির হাওর প্রভৃতি। শীত মৌসুমে হাওরগুলোতে অনেক অতিথি পাখির আনাগোনা দেখা যায়। সেসব অতিথি পাখি দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা।

বিল
সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ১০০ হেক্টর জায়গাজুড়ে বাইক্কা বিল রয়েছে। সেই বিলে প্রতি বছর অনেক অতিথি পাখি আসে।  পাখিদের সঠিক পর্যবেক্ষণের জন্য বিলে তিন তলাবিশিষ্ট একটা পর্যবেক্ষণ টাওয়ারও আছে। সারা বছরই বাইক্কা বিলে পাখি দেখা যায়, তবে শীত মৌসুমে তা যেন পাখিদের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়। এ বিলের উল্লেখযোগ্য পাখি হচ্ছে, পানকৌড়ি, রাঙ্গাবক, শঙ্খচিল, ধলাবক, দলপিপি ইত্যাদি। শীত মৌসুমে অনেক পর্যটক এই বাইক্কা বিলে অতিথি পাখি দেখতে আসেন।

সাভার
সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শীতকালে অতিথি পাখি দেখার জন্য প্রতি বছর সেখানে অনেকেই ঘুরতে যায়। এ ছাড়া সাভারের বিরুলিয়ার গোলাপ গ্রাম খুব বিখ্যাত। সেখানে শীত মৌসুমে অনেক দর্শনার্থী ঘুরতে যান। বিরুলিয়াতে ১০-১৫ ঘর পুরনো আমলের বাড়িও আছে।

মানিকগঞ্জ
ঢাকার অদূরে মানিকগঞ্জ জেলা। শহরে থেকে হাঁপিয়ে উঠে অনেকে গ্রামের স্বাদ পেতে সেখানে যায়। শীত মৌসুমে সহজে খেজুর রস খেতে এবং গ্রামের শীত উপভোগ করতে সেখানে ছুটে যায় অনেকে। মানিকগঞ্জে বেশ কিছু পুরনো জমিদার বাড়ি রয়েছে।

নেত্রকোনা
শীত মৌসুমে সমুদ্র এবং নদী বিধৌত অঞ্চলে শীত তুলনামূলক কম থাকে। তাই পর্যটকরা এ মৌসুমে এসব অঞ্চলে ছুটে যান। নেত্রকোনা জেলায় রয়েছে সোমেশ্বরী নদী, কমলারানীর দিঘি, বিরিসিরি, চিনামাটির পাহাড় প্রভৃতি স্থান। এ ছাড়া এখানে ডিঙ্গাপোতা নামে একটি হাওরও রয়েছে। সারা বছর পর্যটকের আনাগোনা থাকলেও শীতকালে পর্যটকের আনাগোনা আরও বেড়ে যায়।

শেরপুর
শেরপুরে রয়েছে ঘোরার জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট গজনী অবকাশ কেন্দ্র। প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘেরা এ অবকাশকেন্দ্রে গেলে যেকোনো পর্যটকই মুগ্ধ হবে।

রংপুর
পায়রাবন্দ, দেবী চৌধুরানীর রাজবাড়ি, তাজহাট জমিদার বাড়ি- রংপুর গেলে এসব স্থান অবশ্যই ঘুরে আসা উচিত। পায়রাবন্দ হচ্ছে মিঠাপুকুর উপজেলার একটি গ্রাম, যেখানে মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়া জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার সম্মানার্থে পায়রাবন্দ গ্রামে ৩.১৫ একর জমিতে বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়। যার ভেতর রয়েছে নান্দনিক বাগান, ডরমেটরি ভবন, গবেষণা কক্ষ, লাইব্রেরি, গেস্ট হাউস প্রভৃতি। দেবী চৌধুরানীর রাজবাড়িটি রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলায় অবস্থিত। ৩২০ বছর আগে ২৮ একর জায়গার ওপর খাল, পুকুর এবং ফসলি জমি বেষ্টিত এ জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। ঐতিহাসিকভাবে এ বাড়িটি খুব সমাদৃত। কেননা, ইতিহাসে দেবী চৌধুরানী এক বহুল সুপরিচিত নাম। রংপুর জেলার কথা ভাবলেই প্রথম যে চিত্র চোখে ভেসে ওঠে, তা তাজহাট জমিদার বাড়ি। শ্বেতশুভ্র এই বিশাল বাড়িটি সদর উপজেলাতেই অবস্থিত। রংপুর ভ্রমণে গেলে অবশ্যই এ জায়গাটি ঘুরে আসা উচিত।

পঞ্চগড়
শীতের প্রারম্ভ পঞ্চগড় ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। অক্টোবর-নভেম্বরে পঞ্চগড় থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় বলে এ সময়টায় এখানে পর্যটকদের আনাগোনা বেশি থাকে। উল্লেখ্য যে, পঞ্চগড়ের ডাকবাংলো থেকে কাঞ্চজঙ্ঘার দৃশ্য সবচেয়ে ভালোভাবে দেখা যায়। এ ছাড়া পঞ্চগড়ে আরও আছে কাজী টি এস্টেট, জিরো পয়েন্ট, ভিতরগড় দুর্গনগরী, মহারাজার দিঘি, রকস মিউজিয়াম, আটোয়ারী ইমামবাড়া, জগবন্ধু ঠাকুরবাড়ি, গোলকধাম মন্দির প্রভৃতি স্থান।

লালমনিরহাট
এ জেলার কিছু দর্শনীয় স্থান হচ্ছে- তুষভাণ্ডার জমিদার বাড়ি, কাকিনা জমিদার বাড়ি, শালবন, তিন বিঘা করিডোর, তিস্তা ব্যারেজ, বুড়িমারি স্থলবন্দর ও জিরো পয়েন্ট, ভূমি গবেষণা জাদুঘর ইত্যাদি। তুষভাণ্ডার জমিদার বাড়িটি কালীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। এটি একটি ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি, যা ৪০০ বছরের পুরনো। কালীগঞ্জ উপজেলারই আরেকটি জমিদার বাড়ি হচ্ছে কাকিনা জমিদার বাড়ি। এটি কাকিনা গ্রামে অবস্থিত এবং এটিও ৪০০ বছরের পুরনো। লালমনিরহাটে রয়েছে অনেক শালবন। অনেক পর্যটক শুধুমাত্র শালবন দেখার জন্যেও লালমনিরহাটে যায়। পাটগ্রাম উপজেলার সীমান্তে রয়েছে একটি স্বতন্ত্রভূমি, যা তিন বিঘা করিডোর নামে পরিচিত। এটি ঠিক পর্যটন স্থান না হলেও অনেকে কৌতূহলবশত এখানে ঘুরতে যায়, স্বচক্ষে দেখে আসে এখানকার মানুষের জীবনযাত্রা।

কুড়িগ্রাম
এ জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- উলিপুর মুন্সিবাড়ি, নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি, চান্দামারী মসজিদ, পাঙ্গা জমিদার বাড়ি, ভেতরবন্দ জমিদার বাড়ি, জয়মনিরহাট জমিদার বাড়ি প্রভৃতি। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার উলিপুর মুন্সিবাড়িটির নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী পর্যটকদের আকর্ষণ করে। নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ির অবস্থান ফুলবাড়ি উপজেলায়। এ বাড়িটিও বড় পরিসরে নির্মিত। রাজারহাট উপজেলার চান্দামারী মসজিদটি মোগল ও সুলতানী স্থাপত্যকলার আদলে নির্মিত অনন্য এক স্থাপনা।

ঠাকুরগাঁও
বালিয়া মসজিদ, লোকায়ন জীবন বৈচিত্র জাদুঘর, রাজা টংনাথের বাড়ি এসব হচ্ছে ঠাকুরগাঁও জেলার দর্শনীয় কিছু স্থান। লোকায়ন জীবন বৈচিত্র জাদুঘরটি ঠাকুরগাঁও জেলা সদর থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রান্তিক মানুষের জীবনবৈচিত্র ও গ্রামীণ লোকজ সংস্কৃতি তুলে ধরা এবং সংরক্ষণ করা হয়েছে এখানে।

দিনাজপুর
জেলার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলো হচ্ছে- দিনাজপুর রাজবাড়ি, রামসাগর, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, স্বপ্নপুরী ইত্যাদি। দিনাজপুর রাজবাড়ির অবস্থান দিনাজপুর সদরেই। জেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রামসাগর মানবসৃষ্ট দিঘী। স্বপ্নপুরী দিনাজপুর উপজেলার নবাবগঞ্জ উপজেলায় একটি বিনোদন পার্ক। শীত মৌসুমে এখানে বেশ ভিড় হয়।

নীলফামারী
চিনি মসজিদ, ক্যাথলিক গীর্জা, হরিশ্চন্দ্রের পাঠ, ধর্মপালের গড় নীলফামারী জেলার উল্লেখযোগ্য স্থান। কলকাতা থেকে মর্মর পাথর ও চিনামাটি এনে নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীতে এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। হরিশ্চন্দ্রের পাঠ মূলত একটি রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ, যা জলঢাকা উপজেলায় অবস্থিত।

রাজশাহী
রাজশাহী হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি শহর। শহরের উল্লেখযোগ্য কিছু দর্শনীয় স্থান হচ্ছে- বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, পদ্মা গার্ডেন, মুক্তমঞ্চ, টি বাঁধ, সেন্ট্রাল পার্ক, চিড়িয়াখানা ইত্যাদি। এছাড়া রাজশাহীর অন্যান্য উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আরো অনেক দর্শনীয় স্থান। শহরের বিভিন্ন জায়গায় সময় কাটানো এবং দেখার জন্য পর্যাপ্ত স্থান রয়েছে। পুঠিয়া উপজেলায় রয়েছে পুঠিয়া রাজবাড়ি, বাগমারা উপজেলাতে আছে হাজারদুয়ারী জমিদার বাড়ি। বাঘা উপজেলায় আছে ঐতিহাসিক বাঘা শাহী মসজিদ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ
এই জেলা আমের জন্য বিখ্যাত হলেও বিগত কিছু বছর ধরে আলপনা গ্রামের কারণে নতুন করে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং পর্যটকদের আনাগোনাও বেড়েছে। এ জেলায় ঘুরতে গেলে দেখে নিতে পারেন- বাবু ডাইং, আলপনা গ্রাম, নাচোল রাজবাড়ি, কোতোয়ালী দরওয়াজা, ছোট সোনা মসজিদ, তোহাখানা কমপ্লেক্স, দারাসবাড়ি মসজিদ প্রভৃতি। এখানকার বেশ কিছু টিলায় আদিবাসীরাও বসবাস করে। অবারিত গাছপালা, পাখপাখালির ডাকাডাকি, আদিবাসীদের জীবনবৈচিত্র দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। আলপনা গ্রামটি নাচোল উপজেলায় অবস্থিত। গ্রামের প্রতিটি বাড়ি আলপনা দিয়ে সাজানো বলে এটি আলপনা গ্রাম হিসেবে সুপরিচিতি পেয়েছে। এ গ্রামের সৌন্দর্যের টানে সারা দেশ থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণপিপাসু মানুষেরা।

নাটোর
নাটোরের কিছু দর্শনীয় স্থান হচ্ছে- রানী ভবানীর রাজবাড়ি, উত্তরা গণভবন, চলনবিল ইত্যাদি। রানী ভবানীর রাজবাড়ি নাটোর রাজবাড়ি হিসেবেও পরিচিত। দিঘাপাতিয়া রাজবাড়িটি বর্তমানে উত্তরা গণভবন নামে পরিচিত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটিকে উত্তরা গণভবন নামকরণ করেন। নাটোরের আরো একটি উল্লেখযোগ্য জায়গা হচ্ছে চলনবিল। শীত মৌসুমে চলনবিল জুড়ে আদিগন্ত বিস্তৃত সরিষা ফুল ফুটে থাকে। চলনবিলের এই মোহনীয় রূপের টানে পর্যটকরা এ মৌসুমে চলনবিল দেখতে আসে।

বগুড়া
বগুড়া জেলার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান হচ্ছে মহাস্থানগড়, খেরুয়া মসজিদ, রানী ভবানীর পৈতৃক নিবাস, ভীমের জাঙ্গাল, ভাসু বিহার, গোকুল মেধ প্রভৃতি। বগুড়া জেলার সবচেয়ে আইকনিক জায়গা হচ্ছে মহাস্থানগড়। করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে মহাস্থানগড়ের অবস্থান। এই মহাস্থানগড়ই ছিলো প্রাচীন বাংলার রাজধানী। এর ভেতর রয়েছে মৌর্য, গুপ্ত, পাল, সেন বিভিন্ন শাসনকালের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ২০১৬ সালে মহাস্থানগড়কে সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জ জেলায় ঘুরে আসতে পারেন রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি, নবরত্ন মন্দির, বঙ্গবন্ধু যমুনা ইকোপার্ক, যমুনা সেতু ইত্যাদি। উল্লাপাড়া উপজেলায় রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নবরত্ন মন্দির।

জয়পুরহাট
জয়পুরহাটে গেলে যেসব স্থান ঘুরে দেখা যেতে পারে, সেগুলো হচ্ছে লাকমা রাজবাড়ি, পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি, নান্দাইল দীঘি ইত্যাদি। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী উপজেলা পাঁচবিবি। সেই উপজেলাতেই লকমা রাজবাড়ির অবস্থান। ৩০০ বছর পূর্বে এই রাজবাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছিলো। জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলায় নান্দাইল দীঘির অবস্থান, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১ কিলোমিটার। ১৬১০ সালে এ দিঘিট খনন করা হয়েছিলো।

নওগাঁ
নওগাঁ জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বলিহার রাজবাড়ি, দুবলহাটি জমিদারবাড়ি, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, কুসুম্বা মসজিদ, রবি ঠাকুরের কুঠিবাড়ি, ভবানীপুর জমিদার বাড়ি ইত্যাদি। পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার নওগাঁ জেলার সবচেয়ে দর্শনীয় একটি স্থান। এটি একটি প্রাচীন বৌদ্ধবিহার, যা সোমপুর বিহার হিসেবেও পরিচিত এবং এর অবস্থান বদলগাছি উপজেলায়। ১৯৮৫ সালে এটি বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কো থেকে স্বীকৃতি লাভ করে।

যশোর
যশোর রোড, বেনাপোল স্থলবন্দর, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের সমাধিক্ষেত্র, মধুসূদন দত্তের বাড়ি, কালেক্টরেট পার্ক এসব হচ্ছে যশোর জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান। মাইকেল মধুসূদন দত্তের সম্মানার্থে সেখানে জাদুঘর, লাইব্রেরি এবং পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে, যা মধুপল্লী নামেও পরিচিত। যশোর রোড ১২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি ঐতিহাসিক সড়ক, যা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উভয়ের মধ্যে বিরাজমান। বেনাপোল স্থলবন্দর বাংলাদেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর। এছাড়া শীত মৌসুমে খেজুর রস খাওয়ার জন্য অনেক দর্শনার্থী যশোরে গিয়ে থাকেন। যশোরের খেজুর রস এবং গুড় সারা দেশে বিখ্যাত।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor