গল্প আছে একশ-হাজার
এ গল্পটা একটা রাজার
এক যে ছিল পেটুক রাজা লাড্ডু খাঁ তার নাম
লাড্ডু খেয়ে তুলত ঢেকুর জমত গোঁফে ঘাম।
তার ছিল না কোনো তাড়া
গাপুসগুপুস খাওয়া ছাড়া
ট্যাক্স বসিয়ে বাড়িয়ে দিয়ে সকল কিছুর দাম
সিংহাসনে বসে খেত লাড্ডু অবিরাম।
লাড্ডু রাজা পরত জানি
কমলা রঙের শেরোয়ানি
পাগড়ি মুকুট রাজপতাকা
থাকত তাতে লাড্ডু আঁকা
রাজপ্রাসাদের সামনে বিশাল মূর্তি ছিল তার—
দাঁড়িয়ে রাজা লাড্ডুমুখে, বাড়িয়ে তলোয়ার।
লাড্ডু রাজার মন্ত্রী উজির সৈন্য চাকরবাকর
সামনে এলে বলত রাজা, ‘কই দেখি তো হাঁ কর’
হাঁ করে মুখ বাড়িয়ে দিতেই অমনি রাজা হেসে
মুখের ভেতর বিরাট বিরাট লাড্ডু দিত ঠেসে।
লাড্ডু প্রধান খাদ্য ছিল
প্রজারা তাই বাধ্য ছিল
হোক না বাসি পানসে তেতো
সবাই খালি লাড্ডু খেতো
অসুখবিসুখ পেট খারাপেও পেত না নিস্তার
পরীক্ষাতে লাড্ডু পেলে জুটত পুরস্কার।
লাড্ডু খেয়ে সকল প্রজা
রাজার ভয়ে থাকত সোজা
বন্ধ করে ব্যবসা আড়ত দোকান বাড়িঘর
কৃষক তাঁতি সবাই ছিল লাড্ডু কারিগর।
একদিন সেই লাড্ডু রাজা করল আইন জারি
লাড্ডুপূজা করবে না যে মুণ্ডু যাবে তারই।
দেশের যত বাচ্চা বুড়ো আণ্ডা গুঁড়ো ধাড়ি
নাচবে পূজায় মাথায় নিয়ে লাড্ডুবোঝাই হাঁড়ি।
নাচে গানে জমবে আসর কাটবে জাতির শনি
দেশ বিদেশের মঞ্চে হবে লাড্ডু প্রদর্শনী।
ঢোল পিটিয়ে রাজা এমন আজব কথা বলায়
লাড্ডু খেতে গিয়ে হঠাৎ আটকাল তার গলায়।
চেঁচিয়ে রাজা মুখটা ধুয়ে
ধপাস করে পড়ল শুয়ে
দৌড়ে এলো লাড্ডু রানি
খাইয়ে দিল সাবান পানি
কিন্তু তাতে কাজ হলো না, বাড়ল বরং ঝাঁজ
বদ্যি এলো হেকিম এলো সঙ্গে কবিরাজ।
রাজার চোয়াল শক্ত হলো হেঁচকি উঠে উঠে
কাঠমিস্ত্রি ইঞ্জিনিয়ার সবাই এলো ছুটে।
হাতুড়ি শিক করাত হাতে সম্মিলিত প্রচেষ্টাতে মারল সবাই ফেল
মরার ভয়ে রাজার টাকে জমতে থাকে তেল।
তেত্রিশটি ঘণ্টা ধরে
তিরাশিবার চেষ্টা করে
সাঁড়াশি ড্রিল চালিয়ে যখন ব্যর্থ অভিযান
লাড্ডু রাজা ধরল শেষে ইন্তেকালের ভান।
রাজার চোয়াল করতে সোজা
থুত্থুড়ে এক বৃদ্ধ ওঝা
রাজার গালে চটাস করে মারল কষে চড়
ছিটকে এলো লাড্ডু হঠাৎ, থামল শেষে ঝড়।
ওঝার চড়ে রাজার মুখের লাড্ডু হলো বের
লাড্ডু রাজা লাড্ডু খাওয়ার শাস্তি পেল টের।
Publisher & Editor