দাদি-নানিদের অনুসরণ করা রূপচর্চার পদ্ধতি যে আজও বেশ কাজে দেয়, তা অস্বীকার করা যাবে না মোটেও। প্রত্যেকটি দেশেই সৌন্দর্যচর্চার নিজস্ব কিছু উপাদান আছে, যা বহুদিন ধরে রূপচর্চায় গুরুত্ব পেয়েছে। বিশ্বজুড়ে নারীরা তাঁদের সৌন্দর্য ধরে রাখতে স্থানীয় উপাদান ও প্রাচীন রূপচর্চার পদ্ধতির ওপর নির্ভরশীল। আসুন জেনে নিই বিভিন্ন দেশের কিছু বিশেষ সৌন্দর্যচর্চার উপাদান সম্পর্কে।
ভারতে হলুদ
ভারতীয় উপমহাদেশে উৎপাদিত এক জাদুকরী উপাদান হলুদ। এতে থাকা জীবাণুনাশক ও প্রদাহনাশক গুণ ব্রণ ও অন্যান্য ত্বকের সমস্যা দূর করে। এর পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। বিয়ের আগে ‘গায়েহলুদ’ অনুষ্ঠানে কনের ত্বক উজ্জ্বল করার জন্য কাঁচা হলুদের ব্যবহার হয়ে আসছে অনেক কাল ধরেই।
জাপানে চালের পানি ও মাচা চা
জাপানিরা ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করতে বেশ পারদর্শী। জাপানের নারীরা তাঁদের ত্বককে উজ্জ্বল ও কাচের মতো চকচকে রাখতে ব্যবহার করেন চালের পানি। চালের পানিতে থাকা বিভিন্ন খনিজ উপাদান ত্বককে টান টান রাখতে এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া মাচা হলো অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ একটি সবুজ চা, যা ত্বক থেকে বার্ধক্যের প্রভাব কমায়।
মিশরে মধু
প্রাচীন মিসরের রানি ক্লিওপেট্রার সৌন্দর্যের কথা কম-বেশি সবারই জানা! রানির সৌন্দর্যের গোপন রহস্য ছিল মধু। মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। এটি একই সঙ্গে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান হিসেবে কাজ করে। মধু ব্যবহারে ত্বকের সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বক হয় নরম ও মোলায়েম।
মরক্কোর আর্গান তেল
আর্গান তেলকে বলা হয় তরল সোনা (লিকুইড গোল্ড)। বহুকাল ধরেই মরক্কোর নারীরা আর্গান তেল ব্যবহার করে আসছেন। এটি ব্যবহৃত হয় তাঁদের ত্বক ও চুলের যত্নে। মরক্কোতে জন্মানো আর্গানগাছের ফলের বীজ থেকে মূলত এই তেল তৈরি হয়। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সৌন্দর্যচর্চার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই তেল। এতে আছে ভিটামিন ই এবং প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং চুলকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও মসৃণ করে।
মরক্কোর নারীরা ব্যবহার করেন আর্গান তেল
অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী নারীরা তাঁদের ত্বকের যত্নে বহুদিন ধরে ক্যাকাডু প্লাম ব্যবহার করে আসছেন। এই ফলটি ভিটামিন সির প্রাকৃতিক উৎস হিসেবে পরিচিত, যার কারণে এটি ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। ক্যাকাডু প্লামে ভিটামিন সির পরিমাণ কমলালেবুর চাইতেও বেশি হওয়ায় এটি ত্বকের কোষ পুনরুদ্ধারে বেশ সহায়ক।
ব্রাজিলের কফি
পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি কফি উৎপাদিত হয় ব্রাজিলে। সেখানকার নারীরা তাই সৌন্দর্যচর্চায় ব্যবহার করেন কফি স্ক্রাব। কফি দিয়ে তৈরি স্ক্রাব ত্বকের মৃত কোষ দূর করে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং ত্বকের মসৃণভাব বজায় রাখে। নিয়মিত কফি স্ক্রাব ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়তাও করে।
নাইজেরিয়ার শিয়া বাটার
আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার নারীরা ত্বকচর্চায় শিয়া বাটার ব্যবহার করে আসছেন বহু প্রজন্ম ধরে। শিয়া বাটার তাঁরা মূলত ত্বকের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করেন। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এ এবং ই। যা ত্বককে গভীরভাবে পুষ্টি প্রদান করে ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং ত্বককে কোমল রাখে।
Publisher & Editor