আমরা মস্তিষ্কের খুব সামান্য অংশই ব্যবহার করি। স্বয়ং আইনস্টাইনই নাকি তাঁর মস্তিষ্কের শতকরা ১০ ভাগের বেশি ব্যবহার করেননি, এমন একটা মিথ চালু আছে। বুদ্ধি বাড়ানো মানে হলো মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ানো। চট করে জেনে নেওয়া যাক, মস্তিষ্ককে কার্যকর করার কিছু কার্যকর উপায়।
১. মাইন্ড ডায়েট
‘মানুষ যা খায়, মানুষ তা–ই,’ কথাটা নিশ্চয়ই শুনেছেন? মস্তিষ্কের ক্ষেত্রেও তা সত্য। তাই প্রতিদিন এমন কিছু করুন, যাতে মস্তিষ্ক সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। যেমন: বই পড়া, অঙ্ক করা, পডকাস্ট শোনা, পাজল মেলানো ইত্যাদি। দাবা খেলা মস্তিষ্কের জন্য খুবই ভালো ব্যায়াম।
২. কৌতূহলী মন
বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো কেন? শিশুর কৌতূহলী মনটাকে বাঁচিয়ে রাখুন। প্রতিদিন কোনো একটা বিষয় নিয়ে গভীরভাবে ভাবুন। প্রশ্ন করুন। একটা অনুসন্ধিৎসু মনের কোনো বিকল্প নেই।
৩. ‘পাওয়ার অব সাইলেন্স’
অনেক সময় এমন হয় যে নানা ভাবনায় আপনি ঠিক করে কিছুই ভাবতে পারছেন না।
প্রতিদিন ৫ মিনিট সময় রাখুন কিছুই না করার জন্য। ৫ মিনিটের এই বিরতির পর আপনার মস্তিষ্ক নতুন করে নানা কিছুর সঙ্গে ‘কানেক্ট’ করতে চায়। সমস্যা সমাধান করা সহজ হয়।
৪. উল্টো করে ভাবুন
উল্টো করে গুনুন। উল্টো করে হাঁটুন। আগে সমাধান ভাবুন। উত্তর দেখে প্রশ্ন ঠিক করুন। একটা গণিত উল্টোভাবে মেলানো যায় কি না, দেখুন। একাধিক সমাধান ভাবুন। যুক্তিকে উল্টোভাবে খাটাতে চেষ্টা করুন।
৫. ‘কমফোর্ট’কে চ্যালেঞ্জ করুন
নতুন নতুন রাস্তায় হাঁটুন। মস্তিষ্ককে চমক দিন। নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করান। প্রতিনিয়ত নতুন কিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে অভ্যস্ত করুন।
৬. নতুন কিছু শিখুন
প্রতিদিন নতুন কিছু শিখুন। পেপার পড়ুন। খবর দেখুন। নতুন একটা ভাষা শিখুন। কোডিং, ওয়েব ডেভলপিং বা কোনো সফটওয়্যারের কাজ শিখতে পারেন। এগুলো মস্তিষ্কের খাবার।
৭. ঘুমানোর আগে
রাতে ঘুমানোর আগে বিছানায় গিয়ে চোখ বন্ধ করে সারা দিনে কী ঘটল, কী কী শিখলেন, নতুন কার সঙ্গে পরিচয় হলো, তার কী নাম, এগুলো সব একবার করে মনে করার চেষ্টা করুন।
৮. একেবারেই আপনার মতো নয়, এমন মানুষের সঙ্গে কথোপকথন
পড়াশোনা, পেশা, বয়স, সামাজিক অবস্থান, লিঙ্গ, দেশ, জাতি ইত্যাদি ভেদে একেবারে ভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথোপকথন আপনার মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য খুবই উপযোগী। তখন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে চিন্তা করা মস্তিষ্কের জন্য সহজ হয়।
৯. ব্যায়াম
ব্যায়াম যে কেবল শরীর বা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, তাই-ই নয়। ব্যায়াম মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলোকে সক্রিয় করে। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল নিশ্চিত করে। ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলো আরও বিকশিত ও শক্তিশালী হয়। আন্তযোগাযোগ বাড়ে। ব্যায়ামের নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টরের ফলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
১০. খাবার
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। মাছ ও তিসির তেলে ওমেগা অ্যাসিড মেলে। মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য গ্লুকোজের ওপর নির্ভরশীল। তাই শর্করা জরুরি। এ ছাড়া কলা, গ্রিন টি, কফি, কলিজা, সামুদ্রিক খাবার মস্তিষ্ক ভালো রাখে।
Publisher & Editor