বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

কবিতার প্রেমে বাসার

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ১৯ নভেম্বর ২০২৪ | ১১

তখন সবে কলেজে ভর্তি হয়েছেন খায়রুল বাসার। আবৃত্তি করতে পছন্দ করতেন। এভাবেই একদিন জীবনানন্দ দাশের কবিতা পড়তে গিয়ে মনে ধরে যায়। একের পর এক পড়তে থাকেন তাঁর কবিতা। কিছু কবিতার অর্থ তাঁকে ধন্দে ফেলে দেয়। সেসব কবিতার অর্থ খুঁজতে গিয়ে দিনের পর দিন চেষ্টা করতে থাকেন। অর্থ খুঁজতে গিয়ে তরুণ এই অভিনেতার মনে হলো, ‘কবিতার আলাদা একটা জগৎ রয়েছে।’ সেই থেকে কবিতার সঙ্গে প্রেম। আজও অক্ষুণ্ন সেই প্রেম। নিয়মিত কবিতা লেখেন বাসার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে প্রথম আলো বন্ধুসভার সক্রিয় সদস্য ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি আবৃত্তি চর্চা চলতে থাকে। সেই সময় আবৃত্তি করতে গিয়ে বেশ কিছু কবিতাও লিখেছিলেন। অনেক কবিতাই প্রকাশ করা হয়নি। তারপর শুধু অভিনয় নিয়েই থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কবিতা তাঁকে ছাড়েনি। এখন পুরোদমে নাটক, সিনেমা, ওয়েব সিরিজে ব্যস্ত হলেও কবিতা লেখার অভ্যাস রয়ে গেছে। সেগুলো যেমন ডায়েরিতে লিখে রাখেন, তেমনি ফেসবুকেও পোস্ট করেন।

সর্বশেষ ফেসবুকে প্রকাশিত একটি কবিতায় লিখেছেন, ‘জানি না সাগর কতটা গভীর! পাহাড়ের গায়ে কত ক্ষত! তবু আমরা ভালোবাসি আমাদের।’ বাসারের মতে, ‘কোনো মানুষের গভীরতা কত, এটা কিন্তু আমরা বুঝতে চাই না। আমরা কেউ কাউকে বুঝি না। সবাই নিজের জায়গা থেকেই আমরা অন্যকে চিন্তা করি। আমরা কিন্তু দিন শেষে খুব কমই কেউ কারও আশ্রয় হতে পারি। সেই বিষয়গুলোই কবিতায় লিখেছি।’ তিনি জানান, মানবিক সম্পর্ক, জীবনবোধের গল্প, একাকিত্ব, বেদনা, ভালো লাগার গল্পগুলো কবিতায় লিখতেই তাঁর ভালো লাগে।

বাসার জানান, দিনের পর দিন কবিতা লিখবেন বলে বসে থেকেও কোনো লাভ হয় না। যখন কবিতা হুট করে মাথায় আসে, তখন শুটিং কিংবা বাসা যেখানেই হোক না কেন, সময় বের করে সেটা লিখে রাখেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় অনেক কবিতা ডায়েরিতে লিখেছিলেন। ইচ্ছা ছিল সেগুলো কোনো একদিন বই আকারে প্রকাশ করবেন। কিন্তু সেই ডায়েরি হারিয়ে যাওয়ায় খুবই কষ্ট পেয়েছিলেন। কবিতাগুলোও লাইন বাই লাইন তাঁর আর মনে নেই।

খায়রুল বাসার বলেন, ‘আগে ক্যাম্পাসে যখন সংগঠন থেকে ম্যাগাজিন বের করতাম আমরা, তখন একবার ছাপা হয়েছিল কবিতা। প্রথম আলোর বন্ধুসভার পেজে ২০১৬ সালের দিকে ভালোবাসা দিবসে একটা কবিতা প্রকাশ পেয়েছিল। পরে কিছু ম্যাগাজিনে কবিতা প্রকাশ পেয়েছে। মাঝেমধ্যে অনেকেই বলেন কবিতা বই আকারে বের করতে। আমার ইচ্ছা আছে।’

এই অভিনেতার ‘দূরদেশ’ ‘চোখ যে মায়ের কথা বলে’, ‘খুনসুটি’ নামে তিনটি নাটক সম্প্রতি একসঙ্গে প্রকাশ পেয়েছে। প্রথম দুটি নাটকের সহশিল্পী তানজিম সাইয়ারা তটিনী, শেষেরটির তানজিন তিশা। বাসার বলেন, ‘প্রবাসীদের গল্প নিয়ে দূরদেশ নাটকটি দর্শককে ইমোশনাল করে দিয়েছে। অনেকের জীবনের সঙ্গে গল্পটি মিলে গেছে। কেউ কেউ মন্তব্য করছেন, চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি তাঁরা।’

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor