একদিনের ট্যুরে যারা ঢাকার আশপাশে ঘুরতে চান, তাদের জন্য বড় সর্দার বাড়ি হতে পারে সেরা এক স্থান। এটি ঐতিহাসিক এক পর্যটন স্থান। ঢাকার খুব কাছে হওয়ায় একদিনেই আপনি ঘুরে আসতে পারবেন সোনারগাঁওয়ের বড় সর্দার বাড়ি থেকে।
সোনারগাঁওয়ের এই বড় সর্দার বাড়ির ইটের ফাঁকে ফাঁকে ইতিহাস, বাতাসের অনুরনণে দুর্বোধ্যতা আর মেঝে জুড়ে রহস্য ও রোমাঞ্চ। খাজাঞ্চিখানা, দরবার কক্ষ, ঠাকুরঘর, গোসলখানা, কূপ, নাচঘর আর গুপ্তপথ নিয়ে বড় সর্দার বাড়ি। অবয়বে পুরনো বৈভব নেই কিন্তু বৈভবের চলে যাবার দাগ রয়েছে।
বাড়ির সামনে দেখবেন দীঘি। ঝলমল রাতে প্রাসাদের লাল, নীল, সবুজ চিনামাটির ভাঙা প্লেটের উপর চাদের আলো পরে আর তার ছায়া চিকমিক করে দীঘির পানিতে পড়ে অপরূপ ছায়াবাজির সৃষ্টি করে।
প্রচলিত আছে যে সোনারগাঁওয়ের এই দ্বিতল বড় সর্দার বাড়িটি ঈসা খাঁ তৈরি করেছিলেন কিন্তু আসলে তা নয়। ঈসা খাঁর সময় এই জায়গায় একটি ইমারত ছিল কিন্তু এখন যেই বাড়িটি দাঁড়িয়ে আছে সেটা কোন এক বাঙালি ধনী বনিক ১৯ শতকের শেষদিকে তৈরি করেছিলেন।
ঈসা খাঁর সময়ের ইমারতটি এখনকার বাড়ির মধ্যভাগে লাল রঙের বর্গাকৃতির একটি জায়গা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর দালানের সামনের অংশটি ১৯০২ সালে নির্মাণ করা হয়। দালানের সামনে ইটের তৈরি বাঁধানো ঘাটের দুই দিকে দুজন ইংরেজ অশ্বারোহীর মূর্তি আছে।
মোট ২৭ হাজার ৪০০ বর্গফুটের দালানটির নিচতলায় ৪৭টি ও দোতলায় ৩৮টি ঘর আছে। আশির দশকের গোড়ার দিকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ কর্তৃক উদ্ধার ও আংশিক সংস্কার করার পর এটিকে ন্যাশনাল ফোক আর্ট অ্যান্ড ক্রাফট মিউজিয়াম হিসেবে গড়ে তোলে।
২০১২ সালে কোরিয়ান ইয়াংওয়ান করপোরেশন ২০ কোটি টাকা দেয় দালানটির আদিরূপ ফিরিয়ে আনার জন্য। আদিরূপে ফিরিয়ে আনতে কারিগরেরা চীনামাটির ভাঙা প্লেট, চিটাগুড় ও তেঁতুলের বীজের প্রলেপ দিয়েছেন।
ভবনের মেঝেতে ব্যবহার করেছেন সুদৃশ্য টাইলস ও মার্বেল পাথর। দেশি পর্যটকের প্রবেশমূল্য ১০০ টাকা আর বিদেশি পর্যটকের জন্য ২০০ টাকা।
Publisher & Editor