বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

মায়াবি তিন ডাইনি, কোনো কিছুতেই থেমে থাকেন না যারা

প্রকাশিত: ২২:৫৫, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ | ২০

একজন রসালো প্রাচীন শৈলীর ‘দুষ্ট ডাইনি’র মতো রোমাঞ্চকর কিছু আর নেই। আর সেই ‘রসালো প্রাচীন শৈলীর দুষ্ট ডাইনি’ বলতে এমন এক ব্যক্তিকে বোঝায়- যিনি কেবল নীচতামূলক কাজকর্ম করে আনন্দ উপভোগ করেন। 

উদাহরণস্বরূপ- হ্যারি পটার সিরিজের মনস্তাত্ত্বিক বেলাট্রিক্স লেস্ট্রেঞ্জের কথা বলা যায়। যার লর্ড ভলডেমর্টের প্রতি নিষ্ঠা অপ্রতিদ্বন্দ্বী। অথবা শেক্সপিয়ারের ম্যাকবেথ-এর তিন ডাইনি, যারা ফুটন্ত কড়াইয়ের চারপাশে বসে তাদের পরবর্তী দুষ্ট কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করে থাকেন। 

তাহলে আসুন, কথাসাহিত্যের সবচেয়ে কুখ্যাত কিছু ডাইনিদের পুনর্বিবেচনা করি– যারা অন্যায় কাজে নিন্দিত, অনুতাপহীনভাবে দুষ্ট এবং নির্লজ্জভাবে কূট।

এলফাবা
উইকেড-এর এলফাবা মূলত ভুল বোঝাবুঝির শিকার এবং কেবল নষ্টামি ছড়ানোর আগ্রহ তার একেবারেই নেই। তার ‘দুষ্ট’ উপাধি আসলে কিছুই নয়, একপ্রকার ভুল বোঝাবুঝি। মূলত তার সবুজ চেহারার কারণেই তাকে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। এতে তাকে এমন কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়, যা বোঝার মতো তার চারপাশের মানুষ যথেষ্ট স্মার্ট বা সহানুভূতিশীল নয়। 

সে অধ্যবসায়ী, পরিশ্রমী। তবে ডরোথিকে বন্দি করে শুধু তার মৃত বোনের জুতা ফিরে পাওয়ার জন্যে। যদি নিখাদ দুষ্টুমির প্রশ্ন ওঠে, তাহলে এলফাবা একেবারেই পাশ নম্বর পাবেন না। তবে তিনি গানের তালে উড়ে যাওয়ার মাধ্যমে তার সমসাময়িকদের চমৎকারভাবে পরাস্ত করেন। যেখানে দুষ্টতার ঘাটতি আছে, সেখানে তার কণ্ঠস্বরের পরিসীমা তা পূরণ করে।

গ্র্যান্ড হাই উইচ
রোয়াল্ড ডালের দ্য উইচেস থেকে উঠে আসা গ্র্যান্ড হাই উইচ শিশুদের এমনভাবে ঘৃণা করেন, যেমনটা আপনি বা আমি রান্নাঘরের মেঝেতে একটি ইঁদুর দেখলে করি। তার স্বাভাবিক টাক মাথা এবং নখের জায়গায় ধারালো থাবা রয়েছে। যা দিয়ে এবং কেবল মুখ দেখিয়েই তিনি শিশুদের ভয় পাইয়ে দিতে পারেন। 

তবে তিনি তার আসল রূপ গোপন করতে সুন্দর উইগ, জাঁকজমকপূর্ণ জুতা এবং ঝকঝকে দস্তানা পরেন। পাঁচ তারকা বলরুমে বৈঠক আয়োজন করেন, যাতে তিনি এবং তার সঙ্গী ডাইনিরা আরামে পরিকল্পনা করতে পারেন।

তার মুখে মিষ্টি হাসি নিয়ে শিশুদের হত্যার পরিকল্পনা তিনি গোপন করেন। মিষ্টির লোভ দেখিয়ে শিশুদের কাছে টানেন, তারপর তাদের ওপর চালান অভিনব শাস্তি। যেমন- তাদের চিরকালের জন্য একটি ছবিতে বন্দি করা বা তাদের আঙুলের বুড়ো আঙুল কেটে ফেলা। 

এক পর্যায়ে তিনি একটি মধ্যস্থতাকারীর প্রবর্তন করেন– মিষ্টির মধ্যে একটি বিশেষ ওষুধ মেশান, যা শিশুদের ইঁদুরে পরিণত করবে এবং পরে পেস্ট কন্ট্রোল দিয়ে তাদের ধ্বংস করা হবে। 

ভলডেমর্টের মতো নয়, গ্র্যান্ড হাই উইচ তার শত্রুদের ধ্বংস করতে একটু বেশি পরিশ্রম করেন। দুই সেকেন্ডের ‘আবাদা কেদাভরা’র চেয়ে।

উইনিফ্রেড স্যান্ডারসন
রোয়াল্ড ডালের গ্র্যান্ড হাই উইচের মতো, হোকাস পোকাস-এর উইনিফ্রেড স্যান্ডারসনও শিশুদের প্রতি প্রচণ্ড ঘৃণা পোষণ করেন এবং তাদের এক লহমায় ধ্বংস করতে চান। তবে গ্র্যান্ড হাই উইচের মতো তার কাছে অনুগত ডাইনির একটি দল নেই। বরং তার সঙ্গে আছে তার দুই বোকাসোকা বোন। যাদের তিনি খুব ভালোবাসেন। তবে তারা তার মতো চতুর নয়।

গ্র্যান্ড হাই উইচ যেখানে মিষ্টির প্রলোভনে শিশুদের আকৃষ্ট করেন, উইনিফ্রেড সেখানে একটি জাদুকরী গানের মাধ্যমে তাদের বশ করেন– আই’ল পুট আ স্পেল অন ইউ। এটি কার্যকরও হতে পারত, যদি না স্কুবি ডু’র খলনায়কদের মতো কিছু দুষ্টু ছেলেমেয়ে তাদের পথের কাঁটা হয়ে না দাঁড়াত।

ডাইনিদের এই তিনটি চরিত্র – ন্যায়বিচারের অভাবে বদনাম হওয়া, নিখাঁদ দুষ্টতা পোষণকারী এবং নির্লজ্জভাবে দুর্বৃত্ত – আধুনিক সাহিত্যের এক একটি অনন্য প্রতীক। সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor