শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

আঘাত পেয়ে নীল হয়ে গেলে কী করা উচিত

প্রকাশিত: ২৩:০০, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৫

প্রতিদিন নানা কর্মকাণ্ডে ও খেলাধুলার সময় শরীরের কোনো অংশে আঘাত লাগতে পারে। অনেক সময় আঘাত পাওয়া জায়গাটি নীল হয়ে যায়। অনেকে এতে ঘাবড়ে যান। আদতে আঘাত পাওয়া জায়গায় রক্ত জমাট বেঁধে এ রকম হয়। আমাদের ত্বকের ঠিক নিচে থাকে ছোট ছোট রক্তনালি। কোনো আঘাতে এসব নাজুক রক্তনালি ফেটে যেতে পারে। রক্তক্ষরণ হলে চামড়ার নিচে এটি দেখতে নীল বর্ণের মতো দেখায়। গাত্রবর্ণের ভিন্নতায় সেটি দেখতে বিভিন্ন বর্ণের মতো হতে পারে।

করণীয়
প্রথমত মনে রাখতে হবে, ত্বকের নিচের অংশের রক্ত জমাট বাঁধা খুব একটা চিন্তার বিষয় নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পর এটি আগের অবস্থায় ফিরে আসে। তবে দ্রুত আগের অবস্থায় আনতে কয়েকটি পন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে। যেমন—

১. আঘাত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিংবা রক্ত জমাট বাঁধার উপসর্গ দেখতে পেলেই ওই স্থানে বরফ ধরতে হবে কিছুক্ষণ। আঘাতের প্রাথমিক অবস্থায় ঠান্ডা দিলে ওই জায়গার রক্তনালি সংকুচিত হয়। এতে বেশি রক্তপাত হয় না এবং ফোলা ও ব্যথা কম হয়। অভ্যন্তরীণ রক্তপাত নীল হতে পারে। এর সঙ্গে ব্যথার ওষুধ, যেমন প্যারাসিটামল বা ব্যথানাশক ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শে খাওয়া যেতে পারে।

২. আক্রান্ত জায়গাটিতে প্রথমে মালিশ করলে তেমন কোনো লাভ হয় না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে মালিশ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে মালিশ করার আগে নিশ্চিত হতে হবে যে হাড় ভেঙেছে কি না। যদি হাড় ভাঙার আশঙ্কা থাকে, তাহলে মালিশ করা যাবে না।

৩. রক্ত জমাট বাঁধার ৪৮ ঘণ্টা পর থেকে এই চিকিৎসা কার্যকর। আঘাতের জায়গায় তাপ দিলে এটি কমতে পারে।

৪. আঘাত পাওয়া স্থানে শক্ত কোনো কিছু, যেমন দাঁতের ব্রাশ বা ধাতব ব্রাশ ঘষলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। ফলে জমাট বাঁধা রক্ত সরে যাবে, তবে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।

৫. রক্ত জমাট বাঁধা স্থানে টুথপেস্ট মাখালে রক্তপ্রবাহ বাড়ে এবং জমাট বাঁধা রক্ত সরে যেতে পারে।

বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে, আঘাত লাগার সঙ্গে সঙ্গে কখনো গরম কিছুর সেঁক দেবেন না। কারণ, গরম সেঁক দিলে ওই জায়গায় রক্ত এসে জমা হয়। পরে ওই রক্ত জমাট বেঁধে গেলে জায়গাটা বেশি ফুলে যায় এবং ফুলে ওঠা জায়গাটিতে প্রচণ্ড ব্যথা করে। সে জন্য প্রথমে ওই স্থানে বরফ বা ঠান্ডা সেঁক দিতে হয়, তাহলে রক্তনালির সংকোচনের জন্য ওই স্থানে রক্ত আসে না। এক থেকে দুই দিন পর অবশ্য গরম সেঁক দিতে হবে।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন
কিছু কিছু রোগ আছে, যেগুলোতে সহজে রক্তক্ষরণ হয়। এ ধরনের রোগে অল্প ব্যথাতেই ত্বক নীল হয়ে যায়। অনেক সময় সেটি বড় আকার ধারণ করে। মেডিকেলের ভাষায়, এটি ব্রুইজ, একাইমোসিস নামে পরিচিত। এ ধরনের রক্তক্ষরণের নমুনা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। অনেকে রক্ত পাতলা করার বা তরল রাখার ওষুধ খান, যেমন ওয়ারফারিন বা অ্যাসপিরিন। এসবের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে বেশি রক্তপাত হতে পারে। এমনটা হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor