সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করতে না পারলে বেকারত্ব দূর হবে না। তথ্য-প্রযুক্তি অনেক দূর এগিয়ে গেছে। সেই তথ্য-প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে না পারলে কোনো পরিচালক সফল হতে পারবেন না। সত্তরের দশকে আমরা যখন চলচ্চিত্রে এসেছি, তখন সেই সময়কে ধারণ করে নির্মাতারা ছবি নির্মাণ করেছেন।
যুগ যেমন পাল্টেছে তেমনি গল্প, চিন্তাধারা, দর্শকের রুচি সবই পাল্টেছে। বর্তমান সময় প্রযুক্তির সময়, এই প্রযুক্তিজ্ঞানের পরিধি বাড়াতে না পারলে সিনেমা বানানো যাবে, কিন্তু সফলতার মুখ দেখা যাবে না। সেই সমস্যাটিই হয়েছে আমাদের চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে। আমরা সেভাবে আধুনিক হতে পারিনি।
এর জন্য অনেক সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশ সরকারের এখানে বড় ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। চলচ্চিত্রকে চাঙ্গা করতে হলে একাডেমি খুলে প্রযুক্তিনির্ভর তারুণ্যকে সহযোগিতা করতে হবে। তা হলে আবারও ঘুরে দাঁড়াবে চলচ্চিত্র।
স্বপ্নের এফডিসে এখন আর খুব একটা যাওয়া হয় না। আর কী কারণেই বা যাব? সেখানে কোনো কর্মকাণ্ড নেই। আমরা যখন চলচ্চিত্রে কাজ করেছি, সেই সময় আর এই সময় আকাশ-পাতাল তফাত। আমরা এনালগ যুগে কাজ করেছি। ডিজিটাল যুগ আসার পর সব কিছু বদলে গেছে।
শুধু আমরা বদলাতে পারিনি। নতুন করে আমাদের শুরু করতে হবে। চলচ্চিত্র মানুষের কথা বলে, দেশের কথা বলে, ইতিহাস ঐতিহ্য ধারণ করে। এত শক্তিশালী একটি মাধ্যম হারিয়ে যেতে পারে না। এ জন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
সব সরকারের আমলে চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে দেখার জন্য দাবি ছিল। কিন্তু কেউই বিষয়টির দিকে নজর দেয়নি। ফলে চলচ্চিত্র অবহেলিতই থেকে গেছে। গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি, ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রির মতো চলচ্চিত্রকেও শিল্পের মর্যাদা দিতে হবে। চলচ্চিত্র শুধু বিনোদন দেয় না, দেশের অর্থনীতির সঙ্গেও এর সম্পর্ক রয়েছে। এখানে কর্মসংস্থানের যেমন সুযোগ রয়েছে, তেমনি দেশকে বিশ্বের কাছে উপস্থাপনেরও সুযোগ রয়েছে।
একসময় নতুন মুখের সন্ধানের মাধ্যমে নতুন নায়ক-নায়িকা খুঁজে বের করা হতো। এখন টিকটক, ইউটিউবে বহু প্রতিভা ছড়িয়ে আছে। সেখান থেকেও শিল্পী খুঁজে আনা যায়।
অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলচ্চিত্র বিষয়ে ডিপার্টমেন্ট খোলা হয়েছে, সেখান থেকে পড়াশোনা করে শিক্ষার্থীরা কী কাজ করবেন যদি সিনেমাই না থাকে? বর্তমানে চলচ্চিত্রের অনেকে বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাঁরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। জরুরি তাঁদের দিকে তাকানো দরকার। এ দায়িত্ব সরকারের। সরকারকে এ নিয়ে পলিসি গ্রহণ করতে হবে।
আমি বিএনপির সাংস্কৃতিক সম্পাদক। দল নির্বাচিত হয়ে এলে আমার ইচ্ছা আছে চলচ্চিত্রের জন্য কিছু করার। সরকারের অনেক কিছু করার রয়েছে বলে আমি মনে করি।
Publisher & Editor