নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি। নন্দিত কণ্ঠশিল্পী। সম্প্রতি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২৩-এর জন্য জুরি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। পাশাপাশি ব্যস্ত আছেন নতুন গানের আয়োজন নিয়ে। এ সময়ের ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে তিনি কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২৩-এর জন্য জুরি হিসেবে কাজ শুরু করেছেন শুনলাম, কেমন লাগছে?
একটার পর একটা সিনেমা দেখছি; ভালো-মন্দের চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ করে নম্বর দিচ্ছি, ভালোই লাগছে। একবারের জন্যেও মনে হয়নি, এই কাজটি আমার জন্য নয়। কারণ সিনেমা তো শুধু গল্প আর অভিনয় নয়, সেখানে নাচ, গান থেকে শুরু করে আরও অনেক উপকরণ থাকে। যার সবকিছু বিচার করেই একেকটি শাখায় পুরস্কার দেওয়া হয়। তাই জুরি দায়িত্ব পালন নিত্যদিনের কাজের মতোই মনে হচ্ছে।
কখনও মনে হয়েছে, অভিজ্ঞতার বিচারে আগেভাগেই জুরি বোর্ডের সদস্য হয়ে গেলেন?
হয়তো অনেকের চেয়ে কম বয়সেই জুরির দায়িত্ব হাতে পেয়েছি, তবে কাজের অভিজ্ঞতায় সেটা একেবারে কম বলা যাবে না। ২০১১ সালে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলাম। এরপর তো থেমে থাকার অবকাশ পাইনি। নিয়মিত সিনেমায় প্লেব্যাক করেছি। এতদিন তো সংগীত সম্পর্কে আমার শিক্ষা, পারদর্শিতা, ধ্যান-ধারণা, জানাশোনা সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা। তারপরও আমি নিশ্চিত, কারও না কারও মনে এই প্রশ্ন ঠিকই এসেছে, আমাকে এখনই কেন জুরি সদস্য করা হলো? যাদের মনে এমন প্রশ্ন উঠে এসেছে, তাদের কাছেই উল্টো এই প্রশ্ন ছুড়ে দিতে চাই, একজন মানুষের অভিজ্ঞতার বিচার ঠিক কীভাবে হয়? তাঁর শারীরিক বয়স, কাজের সংখ্যা, পেশাদারিত্বের সময়সীমা নাকি কাজ কতটা ভালোভাবে রপ্ত করতে পেরেছে, তারই হিসাব-নিকাশ করা হয়? কার কাছে এ প্রশ্নের সঠিক জবাব আছে জানি না। তবে এ বিষয়ে আমার সত্যি স্পষ্ট কোনো ধারণা নেই।
অনেক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, চলচ্চিত্র পুরস্কার বিতরণী শেষে নানা প্রশ্ন উঠে আসছে। জুরিদের পক্ষপাতিত্ব, ভালো কাজের অবমূল্যায়নসহ নানা অভিযোগও শোনা যায়। এবারের জুরিরা এ বিষয়ে আলাদা করে কিছু ভাবছে?
জুরি হিসেবে যদি সৎ থাকা যায়, তাহলে সমালোচনা নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই। আমি অন্তত নিশ্চয়তা দিতে পারি, জুরি হিসেবে নিরপেক্ষ থাকব। জুরি বোর্ডে আরও যারা আছেন, তারাও সমালোচিত হওয়ার মতো কিছু করবেন বলেও আমি মনে করি না। তারপরও কেন জানি মনে হয়, এখন যা কিছুই হবে তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম হবে। অতীত কর্মকাণ্ডই আমাদের এই মানসিকতা তৈরি করে দিয়েছে। খেয়াল করলে দেখবেন, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ছাড়াও অন্যান্য অনেক পুরস্কারও বিতর্কিত হয়েছে। যারা পুরস্কার দিচ্ছেন তাদের অনুষ্ঠানে যদি কোনো শিল্পী উপস্থিত না থাকে, তাহলে সে যোগ্য হলো পুরস্কৃত হয় না। কোনো কোনো পুরস্কার দাতারা তো এও বলে দেন, ‘পুরস্কার যেহেতু পাচ্ছেন, সেহেতু অনুষ্ঠানে একটু পারফর্ম করতে হবে।’ এই হলো আমাদের পুরস্কৃত করার মানসিকতা।
গানের প্রসঙ্গে আসি, আবারও হৃদয় খানের সুরে দ্বৈত গান গাইলেন শুনলাম?
ঠিকই শুনেছেন। এবার নিজেই একটা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। সেখানে গীতিকার গুঞ্জন রহমান, শিল্পী ও সুরকার হিসেবে হৃদয় খান কাজ করছেন। এর বাইরেও আরও কিছু গান তৈরি করেছি। তবে এখনই কোনো কিছু খোলাসা করতে চাচ্ছি, ক’দিন পর সবাইকে জানাব।
Publisher & Editor