বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

পিসিবির ‘গুডবুকে নেই’, তবু ফখরকে দলে চান ইউনিস

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ |

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কেন্দ্রীয় চুক্তিতে নেই। পাকিস্তান দলের জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও তাঁকে রাখা হয়নি। যদিও অন্তর্বর্তীকালীন কোচ আকিব জাভেদ ‘দলের দরজা খোলা’ বলে আশা দেখিয়েছেন; কিন্তু পিসিবির ‘গুডবুকে’ না থাকায় শিগগিরই তাঁর জাতীয় দলে ডাক পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে যথেষ্টই।

তবে এমন সময়ে পাকিস্তান দলের সাবেক অধিনায়ক ইউনিস খানকে পাশে পাচ্ছেন ফখর। ফেব্রুয়ারি–মার্চের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সামনে রেখে ফখরকে জাতীয় দলে ফেরানোর আহ্বান জানিয়েছেন এই সাবেক ব্যাটিং কোচ।

২০১৭ সালে পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়ের ফাইনালে ১১৪ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছিলেন ফখর। এই বাঁহাতি পাকিস্তানের হয়ে সর্বশেষ খেলেছেন গত জুনে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। তাঁকে দলে ফেরানোর পক্ষে সুরটা বেশ চড়াই করেছেন ইউনিস। আজ করাচিতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফখর জামানের অবশ্যই দলে থাকা উচিত। ফখর ও সাইম একসঙ্গে খেললে আমরা ওয়ানডেতে ৪০০–ও করতে পারব। দলের জন্য যেসব খেলোয়াড় নিজেদের নিংড়ে দিয়েছে, পিসিবি তাদের প্রতি সমর্থন দিয়ে প্রজ্ঞাবানের পরিচয় দিয়েছে।’

গতকাল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আনুষ্ঠানিক সূচি ঘোষণা করে আইসিসি। ১৯ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান–নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। এ সময়ের মধ্যে পাকিস্তান সংক্ষিপ্ত সংস্করণে কোনো ম্যাচ খেলবে না। দক্ষিণ আফ্রিকায় দুটি টেস্ট খেলে, করাচি ও মুলতানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আরও দুটি টেস্ট খেলে তারপর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নামবে পাকিস্তান। ফখর দেশের হয়ে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০১৯ সালে। দ্রুত রান তুলতে পারায় সাধারণত সংক্ষিপ্ত সংস্করণেই ফখরকে খেলানো হয়।

জাতীয় দল থেকে বাঁহাতি এ ওপেনারের বাদ পড়ার পেছনে এমনিতে ফিটনেস সমস্যার কথা বলা হলেও মূল কারণ ভিন্ন বলে চাউর আছে। গত অক্টোবরে বাবর আজমকে দল থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে—এমন খবর প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি সমালোচনামূলক পোস্ট দিয়েছিলেন ফখর। পরিণতিতে পিসিবি তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। ফখর সেটির জবাব দিলেও যে বোর্ড ‘সন্তুষ্ট হয়নি’। অনেকের ধারণা ওই এক্স পোস্টের কারণে ফখরকে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে কারণ যা–ই হোক, ফখর সম্ভবত কৃতকর্মের ভুল বুঝতে পেরেছেন। পাকটিভি.টিভিতে দুই দিন আগে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে ফখর বলেন, ‘পরে মনে হয়েছে, পোস্টটি না করলেই ভালো হতো। লোকে ওটা বোর্ডের সমালোচনা হিসেবে বুঝেছে, যেটা শতভাগ ভুল।’

ফখরের দাবি, তাঁর সে পোস্টটি পাকিস্তানের সংবাদকর্মী ও সাবেক ক্রিকেটারদের উদ্দেশ করে দেওয়া, যাঁরা বাবরকে পাকিস্তান দল থেকে বাদ দিতে বলেছিলেন। ফখরের ভাষায়, ‘আমি দল ঘোষণার তিন দিন আগেই পোস্টটি করেছিলাম। কিছু সংবাদকর্মী এবং সাবেকরা বলছিলেন, বাবরকে দল থেকে বাদ দেওয়া উচিত। মনে হয়েছিল, তার অবদানকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এটা বোর্ডের প্রতি সমালোচনা ছিল না।’

ঘরের মাঠে গত অক্টোবরে ইংল্যান্ডের সফরে সিরিজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় টেস্টের দল থেকে বাদ পড়েন বাবর। তার আগেই অবশ্য বাবরের দল থেকে বাদ পড়ার গুঞ্জন চাউর হয়েছিল। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার আগেই ফখর এক্সে করা পোস্টে লিখেছিলেন, ‘বাবর আজমকে বাদ দেওয়া হচ্ছে বলে শুনছি, এটা উদ্বেগজনক। ভারত তো বিরাট কোহলিকে ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের খারাপ সময়ের জন্য বেঞ্চে বসায়নি। ওই সময় কোহলির গড় ছিল যথাক্রমে ১৯.৩৩, ২৮.২১ এবং ২৬.৫০।’

ফখর জানিয়েছেন, হাইপাথাইরয়েডিজম (থাইরয়েডগ্রন্থি অতিরিক্ত থাইরক্সিন হরমোন উৎপাদন করে) রোগ ধরা পড়ায় পিসিবির সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়া হয়েছিল, তিনি দুই মাসের বিশ্রামে থাকবেন। আর এই রোগের ব্যাপারটি তিনি গত মাসে পাকিস্তান দলের অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে জানতেন না। সেই সফরেও ফখরকে স্কোয়াডে রাখা হয়নি। ফখর এ নিয়ে বলেছেন, ‘পিসিবির সঙ্গে বোঝাপড়া হয়েছিল যে আমি দুই মাস বিশ্রামে থাকব। দল অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়ার সময়ও আমি নিজের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতাম না। পরে জানতে পেরেছি, আমি হাইডারথাইরয়েডিজমে ভুগছি। আমি কৃতজ্ঞ যে দলের সঙ্গে যাইনি, কারণ এই অবস্থায় পারফর্ম করা যায় না।’

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor