ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৯০ ফিলিস্তিনি। তাঁদের একজন রোজ খোয়াইস। তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো নেই। তিনি বলেন, ইসরায়েলের কারাগারে শোচনীয় পরিবেশে থেকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
আল-জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের কারাজীবনের দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন এই ফিলিস্তিনি নারী। অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের বাসিন্দা রোজ। তিনি ইতিমধ্যে তাঁর বাড়িতে ফিরেছেন। ফেরার পর আল–জাজিরার সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
বন্দিজীবনের বর্ণনা দিতে গিয়ে রোজ বলেন, ‘আমরা ছোট ছোট চৌকো দিয়ে আকাশ দেখতাম। আমি বলতাম, আশা করি, এই চৌকো ছাড়াই আমি আকাশ দেখব।’ রোজ আরও বলেন, যখনই ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাঁদের (ফিলিস্তিনি কারাবন্দী) কারাগারের বাইরে নিয়ে যেত, তিনি কারমেল পর্বত ও আকাশ দেখতেন।
ইসরায়েলি কারা কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনি বন্দীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করত না বলে জানান রোজ। তিনি বলেন, কোনো চিকিৎসা দেওয়া হতো না। তাঁর স্ট্রোকের লক্ষণ ছিল। হৃৎপিণ্ডের চারপাশে তরল জমেছিল। রক্তচাপের সমস্যাও ছিল।
তবে নিজের অসুস্থতা নিয়ে ভীত ছিলেন না বলে উল্লেখ করেন রোজ। তিনি বলেন, বরং পরিবারের সদস্যরা তাঁর অসুস্থতার কথা জানতে পারলে তাঁদের অবস্থা কী হবে, তা ভেবে তিনি উদ্বিগ্ন থাকতেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার বেলা সোয়া ১১টায় গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার এ চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার।
চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি হবে তিন ধাপে। প্রথম ধাপের ছয় সপ্তাহে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। এর বিনিময়ে নির্দিষ্টসংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি পাবেন ইসরায়েলের কারাগার থেকে। গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বাড়ানো হবে। ইসরায়েলি সেনাদের একাংশকে গাজা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে। স্থায়ীভাবে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে।
১৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলা গাজা যুদ্ধে উপত্যকায় ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। লাখো ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
Publisher & Editor