স্যাম কনস্টাসকে কেমন লাগে? বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজ শেষে নিশ্চয়ই প্রশ্নটি অনেক জায়গায় উঠেছে। কেউ কেউ তাঁর আচরণে হয়তো বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। কেউ আবার সেটাকে হয়তো ইতিবাচক চোখেও দেখেছেন; কিন্তু কনস্টাস নিজে কী ভাবেন নিজেকে নিয়ে? অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন চ্যানেল সেভেনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে।
বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজে মেলবোর্নে চতুর্থ টেস্টে অভিষেক ১৯ বছর বয়সী কনস্টাসের। সিডনিতে পঞ্চম ও শেষ টেস্টেও খেলেন। এই দুই টেস্টে চার ইনিংসে একটি ফিফটিসহ তাঁর রানসংখ্যা ১১৩। ফিফটি পেয়েছিলেন অভিষেক ইনিংসেই। মাত্র দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে পারফরম্যান্স তেমন আহামরি না হলেও কনস্টাস সে সিরিজে আলোচনায় উঠে এসেছিলেন তাঁর ব্যাটিংয়ের ধরন এবং বিরাট কোহলি ও যশপ্রীত বুমরার সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে।
অভিষেক ইনিংসেই কেউ বুমরাকে স্কুপ করে একাধিকবার চার-ছক্কা মারলে নজরে পড়তে বাধ্য। কিংবা প্রথম বলেই ডাউন দ্য উইকেট এসে বুমরাকে চার মারা—এমন আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়েই কনস্টাসের প্রতি আলাদা করে নজর পড়েছে সবার। পাশাপাশি মেলবোর্ন টেস্টে কোহলির সঙ্গে কথা-কাটাকাটি এবং সিডনি টেস্টের প্রথম দিনে বুমরার সঙ্গে লেগে যাওয়াও কনস্টাসকে করেছে আলোচিত ও সমালোচিত। এসব মিলিয়েই তাঁকে নিয়ে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুরকম ধারণাই আছে বিশ্লেষক থেকে ক্রিকেটপ্রেমীদের।
কিন্তু কনস্টাসের নিজের ভাবনাটা কি তাঁকে নিয়ে? তাঁর উত্তর, ‘মাঠে সবাই আমাকে যে চোখে দেখে তা কৌতূহলোদ্দীপক। কেউ কেউ আমাকে অহংকারী মনে করেন, কিন্তু আমি নিজের দক্ষতার ভিত্তিতে স্রেফ আত্মবিশ্বাসী বলে মনে করি।’ অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলে খেলার অনুভূতি নিয়েও বলেছেন কনস্টাস, ‘অবশ্যই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে, দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরেছি। প্যাট কামিন্স, স্টিভ স্মিথদের পাশে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গেয়েছি। আমার অবস্থাটা এমন ছিল যে ভেবেছি “আমি কি সত্যিই মাঠে ওসব করেছি?’”
গ্রিক বংশোদ্ভূত এই ব্যাটসম্যান বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজের শেষ দুই টেস্টে ভারতের খেলোয়াড়দের চোখে চোখ রেখে যেভাবে কথা বলেছেন, লড়াই করেছেন, এসব নিয়ে কোনো অনুশোচনাই নেই তাঁর। মেলবোর্নে কোহলি তাঁর কাঁধে ধাক্কা মেরেছিলেন। সেই ঘটনা নিয়েও কোনো অনুশোচনা নেই কনস্টাসের, ‘না, আমার কোনো অনুশোচনা নেই। আমি এটা ভেবেই থাকতে চাই এবং ব্যাপারটা খুব বিশেষ কিছুও ছিল। মিথ্যা বলব না, অনেকবার (ভিডিও) দেখেছি। এমনকি নেটে যাওয়ার সময় ছোটরা এসে আমার ছবি তোলে, আমি সানন্দে অটোগ্রাফ দিই, সময়টা ক্রিকেটের বাইরেও দিই। কারণ, আমিও এক সময় ওদের মতো ছিলাম।’
মানুষ তাঁকে কীভাবে মনে রাখবে, এ নিয়ে নিজের প্রত্যাশাও জানিয়েছেন কনস্টাস, ‘আমাকে পাঠানো খুদে বার্তায় লেখা হয়, তোমার জন্যই আবারও ক্রিকেট দেখা শুরু করেছি। লোকের এই কথা শুনে খুব ভালো লাগে। আমি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হতে চাই। আমি চাই সবাই স্যাম কনস্টাসকে মনে রাখুক, মাঠ ও মাঠের বাইরে আমি যেমন ঠিক সেভাবেই। আশা করি এটা সত্যি হবে।’
Publisher & Editor