বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

৫–৪: বার্সা কোচ এমন ‘থ্রিলার’ আগে দেখেননি

প্রকাশিত: ২৩:৫০, ২১ জানুয়ারি ২০২৫ |

ফেব্রুয়ারিতে ষাটে পা দেবেন হান্সি ফ্লিক। কোচিং ক্যারিয়ার ২৯ বছরের। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এভাবেও যে ঘুরে দাঁড়ানো যায়—তা আগে কখনো দেখেছেন কি না? ফ্লিকের সোজা কথা, ‘মনে হয় না।’

শুধু বার্সেলোনার কোচ কেন, লিসবনে গতকাল রাতে যা ঘটেছে, তেমন কিছু অনেকেই এর আগে কখনো দেখেননি। স্কোরলাইন ৯ গোলের, যেটা আসলে থ্রিলার। দুবার ২ গোলে পিছিয়ে পড়ে বার্সার অবিশ্বাস্য ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। স্কোরলাইনও অনন্য—চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে ৫-৪ গোলের ম্যাচ এই প্রথম। যেখানে ৩-১ গোলে পিছিয়ে বিরতিতে গিয়ে ৭৭ মিনিট পর্যন্তও ৪-২ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত জিতেছে বার্সাই! উঠেছে শেষ ষোলোতেও।

চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সা এর আগেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ২০১৬-১৭ চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ ষোলোয় পিএসজির বিপক্ষে প্রথম লেগের ৪ গোলের ব্যবধান ঘুচিয়েও জিতেছে বার্সা। কিন্তু ফ্লিকের এই দলটা যা ঘটিয়েছে সেটা চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসেই প্রথম—প্রতিপক্ষের মাঠে ম্যাচের ৭৫ মিনিট পর্যন্তও ২ গোলে পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত জয় তুলে নেওয়া প্রথম দল বার্সা। এমন কিছু দেখার পর মুখ দিয়ে একটি শব্দই স্রেফ বের হতে পারে। পাগলাটে!

ফ্লিকও বলছেন সে কথা, ‘পাগলাটে ম্যাচ ছিল। বেনফিকা খুব ভালো ছিল, বিশেষ করে প্রথমার্ধে। আমরা অনেক ভুল করেছি...বিরতির পর আমরা কিছু পাল্টাতে চেয়েছিলাম। আরও ভালো পজিশন নিতে চেয়েছি এবং বলেছি আমরা ঘুরে দাঁড়াতে চাই।’

৯৬ মিনিটে রাফিনিয়ার গোলটি বার্সার এই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টাকে জয়ে পরিণত করেছে। মৌসুমে ৩০ ম্যাচে এরই মধ্যে ২২ গোল হয়ে গেছে ব্রাজিলিয়ানের, চ্যাম্পিয়নস লিগেই ৮ টি। এর মধ্যে সর্বশেষ গোলটির আনন্দ নিশ্চয়ই অন্যরকম? শুনুন রাফিনিয়ার মুখেই, ‘সম্ভবত ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে আছি। আমরা জানতাম নিজেদের দর্শকদের সামনে তারা কতটা ভালো। কিন্তু বিরতির পর ম্যাচটি ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো মানসিকতা ছিল আমাদের। আমরা কখনোই হাল ছাড়িনি এবং জয় ছিনিয়ে নিতে পেরেছি।’

বার্সার এভাবে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার মাধুর্য আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে গোলকিপার সেজনির দুটি ভুল, যেখান থেকে দুটি গোলও হজম করতে হয়েছে। তবে পোলিশ গোলকিপার দারুণ দুটি সেভও করেছেন। সব মিলিয়ে ম্যাচের পরতে পরতে ছড়িয়ে থাকা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে জিতেছে বার্সা।

এমন একটা ম্যাচের পর ফ্লিক তাই গর্ব নিয়েই বলেছেন, ‘সবচেয়ে ইতিবাচক বিষয় হলো আমাদের মানসিকতা। আমরা ঘুরে দাঁড়িয়ে জিতেছি, যেটা সুন্দর। আর এটাই ফুটবল, এ কারণেই আমরা খেলাটিকে ভালোবাসি। আমার মনে হয় না কখনো এমন ঘুরে দাঁড়ানো দেখেছি। এটা অবিশ্বাস্য।’

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor