তিন দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল মঙ্গলবার বাসায় ফিরেছেন সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন। চিকিৎসকেরা আপাতত তাঁকে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। প্রথম আলোকে আজ বুধবার সকালে এমনটাই জানিয়েছেন বরেণ্য এই সংগীতশিল্পীর মেয়ে ইয়াসমীন ফাইরুজ বাঁধন।
বাঁধন বললেন, ‘আম্মুর এমনিতে কোনো জটিলতা নেই। তিনি ঠিকঠাক আছেন এখন। তবে চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিয়েছেন, আপাতত আম্মু যেন বিশ্রামে থাকেন। তাই এখন কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন না।’
দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় পর গত শুক্রবার গান গাইতে মঞ্চে উঠেছিলেন সাবিনা ইয়াসমীন। সোয়া এক ঘণ্টা গানও গেয়েছিলেন। আমন্ত্রিত দর্শক-শ্রোতারা মুগ্ধ হয়ে শুনছিলেন সেই গান। এর মধ্যে হঠাৎই মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েন শিল্পী। বনানীর পাঁচ তারকা হোটেল থেকে দ্রুত তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় গুলশানের একটি হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতে তাঁকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ভোরে শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হলে তাঁকে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে তিনি দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকেন।
এইচএসবিসি বাংলাদেশের আয়োজনে ‘আমাদের সাবিনা ইয়াসমীন: আমি আছি থাকব’ শীর্ষক এই পরিবেশনার মাধ্যমে এক বছরের বেশি সময় পর আবার মঞ্চে ফেরেন এই শিল্পী। ২০২৩ সালের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, মেলবোর্ন ও ব্রিসবেনে একাধিক স্টেজ শো করেন সাবিনা ইয়াসমীন। গত বছরের শুরুর দিকে আবার তাঁর অসুস্থতার খবর প্রকাশ পায়।
সাবিনা ইয়াসমীন তখন জানান, ক্যানসারের চিকিৎসার পর নিয়মিত ফলোআপে সিঙ্গাপুরে যেতে হয়েছে। একপর্যায়ে আবার অসুস্থতা দেখা দিলে গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি তাঁর অস্ত্রোপচার হয়, এরপর রেডিওথেরাপি নিতে হয়। ইচ্ছা করেই নিজের অসুস্থতার খবর সবাইকে জানাতে চাননি তিনি। চিকিৎসা শেষে গত বছরের মে মাসে ঢাকায় ফেরেন। ১৯৬২ সালে রবীন ঘোষের সুরে প্রথম ছোটদের গানে কণ্ঠ দেন।
এরপর তাঁকে আর সংগ্রাম করতে হয়নি। একের পর এক সিনেমায় গেয়েছেন, প্রকাশিত হয়েছে অ্যালবাম। নিজেকে বাংলা গানের অপরিহার্য শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তবে সংগীতজীবনে কখনো রেওয়াজ করা ছাড়েননি। ১৯৬৭ সালে ‘আগুন নিয়ে খেলা’ সিনেমায় প্রথম গান করেন সাবিনা ইয়াসমীন। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৩ বছর। সর্বশেষ ২০২০ সালে কবরী পরিচালিত ‘এই তুমি সেই তুমি’ ছবিতে কণ্ঠ দেন। শুধু তা-ই নয়, প্রথমবার সুরকার হিসেবে ছবিটির চারটি গানের সুরও করেন সাবিনা ইয়াসমীন।
Publisher & Editor