শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

কোলন ও পাকস্থলীর ক্যানসার ঠেকাতে যেসব অভ্যাস করতে হবে

প্রকাশিত: ০০:৩৭, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৭

প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ২ কোটি মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়, মারা যায় ৯৭ লাখ। মারা যাওয়া রোগীদের ৭০ শতাংশই উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশের বাসিন্দা। বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬৭ হাজার মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয় আর মারা যায় ১ লাখ ১৬ হাজারের বেশি।

কোলন ক্যানসারে বিশ্বে প্রতিবছর ১৯ লাখ ২৬ হাজার (৯ দশমিক ৬ শতাংশ) মানুষ আক্রান্ত হয় এবং ৯ লাখ ৪ হাজার মানুষ মারা যায়। প্রতিবছর বিশ্বে ৯ লাখ ৬৯ হাজার মানুষ পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত হয় আর মারা যায় ৬ লাখ ৬০ হাজার।

বাংলাদেশে কোলন ও পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমেই বাড়ছে। এর কারণ আমাদের জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাস। গ্লোবোকান ২০২২ অনুসারে, বাংলাদেশে প্রতিবছর পাকস্থলী ও কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা যথাক্রমে ৮ হাজার ৩৬৫ ও ৫ হাজার ৭২৩ এবং মৃত্যুর সংখ্যা ৭ হাজার ৩৫৯ ও ৩ হাজার ৪৫৭। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস যেমন উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত মাংস এবং আঁশযুক্ত খাবারের অভাব কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপানও এই ঝুঁকি বাড়ায়।

পাকস্থলীর ক্যানসারের জন্যও এসব কারণ দায়ী। হেলিকোব্যাকটর পাইলোরি নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, ধূমপান, উচ্চ লবণযুক্ত এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার পাকস্থলী ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। প্রাথমিক অবস্থায় এই ক্যানসার শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসার মাধ্যমে সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব।

জীবনধারার পরিবর্তন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে এসব ক্যানসারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রচুর ফলমূল ও সবজি রাখা, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা কোলন ও পাকস্থলীর ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক।

সর্বোপরি, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্তকরণ ক্যানসার প্রতিরোধ ও নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারার মাধ্যমে আমরা কোলন ও পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারি।

কলোরেক্টাল ও পাকস্থলী ক্যানসারের সব রকম চিকিৎসা ও ওষুধ দেশেই বিদ্যমান। সুতরাং, অহেতুক আতঙ্কিত হয়ে বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। নিজে সচেতন হতে হবে, অন্যকেও সচেতন করতে হবে, যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে কোলন ও পাকস্থলী ক্যানসার ধরা পড়ে এবং দেশেই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা যায়।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor