আল মাহমুদ সেই কবি, যিনি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যেক কবিতায় নিয়ে এসেছেন। আদি সাম্যবাদী চেতনা ও নারীর মাহাত্ম্য দিয়ে শুরু করলেও ধীরে ধীরে তিনি পরিপূর্ণ ও মহৎ কবি হয়ে উঠেছেন। প্রকৃতি, প্রেম, স্বদেশ ও লোক ঐতিহ্যের বিষয় সমাহারে তাঁর কবিতা রচনায় যে ধরনের মেধা, শ্রম ও প্রকরণের নতুনত্ব দিয়ে নিজেকে কবি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, তাতে তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন
কবিতায় আল মাহমুদ কিংবা আল মাহমুদের কবিতা—দুটি বিষয়ই এই সময়ে পাঠকসমাজে ভাবনা জোগায়। তাঁর কবিতার অবস্থান সাহিত্যে অতীত বা বর্তমান—দুই সময়েই সুদৃঢ় ও পাকাপোক্ত। পশ্চিমবঙ্গের কবি সুবোধ সরকার বলেছিলেন, ‘আমার চোখে আল মাহমুদ একজন বড় কবি এবং বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠতম কবি। শামসুর রাহমানকে মাথায় রেখেই বলছি, আল মাহমুদের মতো বড় কবি বাংলাদেশে আর জন্মায়নি।
শামসুর রাহমান হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের বিবেক, জাতীয় কবি, জনপ্রিয়তম কবি, তাঁর উচ্চকোটি স্ট্যাটাসে কোনো দিন পৌঁছতে পারেননি আল মাহমুদ। তাঁর নামটি শামসুর রাহমানের পাশে থেকে গেছে আর তিনি দেশের একজন শ্রেষ্ঠতম কবি।’ সুবোধ সরকারের কথার সূত্র ধরেই বলতে হয়, আল মাহমুদ (১৯৩৬-২০১৯) কবিতার ক্ষেত্রকে লোকজ অনুভূতিতে ব্যাপ্ত করেছেন, সেই সঙ্গে নদী ও নারীকে তিনি কবিতায় এনেছেন। কবিতার যাত্রাপথে নিপুণ হাতে চিত্রকল্প আর উপমায় কবিতাকে নিয়ে গেছেন স্বমহিমায়।
কবিতার পরিপোষণ, আলংকারিক কৃতকৌশল, লোকজ ও লোকায়ত জীবনাচার সংস্থাপনায় আল মাহমুদ অন্যতম। আল মাহমুদের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মোড়াইল মহল্লায়, ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই। ১৯৫২ সালে দশম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ঢাকায় ভাষা আন্দোলনের আঁচ তাঁর শহরেও লেগেছিল এবং সেই সময় তিনি এই আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। এরপর পুলিশের ভয়ে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করেন। ১৯৫৪ সালে কৈশোরে প্রথম আসেন ঢাকা শহরে। তাঁর কবিতার পথ মসৃণ ছিল না। পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন কবিতার জগতে খুব সহজে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়নি। ১৯৬০-এর মাঝামাঝি তিনি স্বতন্ত্র মেজাজ আর উচ্চারণে তাঁর অবস্থান পাকাপোক্ত করেন। ১৯৫৪-৫৫ সালের দিকে তাঁর লেখালেখির শুরু।
কলকাতার সত্যযুগ পত্রিকায় প্রথম গল্প প্রকাশের মাধ্যমে লেখার সূত্রপাত। ১৯৫৪ সালের শেষ দিকে ঢাকায় এসে কবিতা লেখায় মনোনিবেশ করেন। আল মাহমুদ নিজেই বলেছেন, ‘আমার কবিতার প্রধান বিষয় হলো নারী ও প্রকৃতি। আমি একসময় ভাবতাম, একজন পুরুষের কাছে নারীর চেয়ে সুন্দর আর কী-ই বা আছে? না, কিছু নেই। দয়িতার দেহের উপমা দিতে কবিরা পৃথিবী নামক এই গ্রহকে চষে ফেলেছেন। এর প্রকৃতির কথা বলতে গেলে বলতে হয়, আমি নিসর্গরাজি অর্থাৎ প্রকৃতির মাঝে এমন একটা সংগুপ্ত প্রেমের মঙ্গলময় ষড়যন্ত্র দেখতে পাই, যা আমাকে জগৎ রহস্যের কার্যকারণের কথা ভাবায়। একঝাঁক পাখি যখন গাছে গাছে লাফিয়ে বেড়ায়, মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে পতঙ্গ ও পিঁপড়ের সারি আর মৌমাছিরা ফুল থেকে ফুলে মধু শুষে ফিরতে থাকে, আমি তখন শুধু এই আয়োজনকে সুন্দরই বলি না; বরং অন্তরালবর্তী এক গভীর প্রেমময় রমণ ও প্রজননক্রিয়ার নিঃশব্দ উত্তেজনা দেখে পুলকে শিহরিত হই।’
আগেই বলেছি, আল মাহমুদের আবির্ভাব মধ্য পঞ্চাশে। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে ত্রিশোত্তর আধুনিক কবিতায় আল মাহমুদই সবচেয়ে উজ্জ্বল আধুনিক কবি। সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ উল্লেখ করেছেন, ‘তিরিশ দশকীয় প্রবণতার মধ্যেই ভাটিবাংলার জনজীবন, গ্রামীণ দৃশ্যপট, নদীনির্ভর জনপদ, চরাঞ্চলের কর্মমুখর জীবনচাঞ্চল্য ও নর-নারীর চিরন্তন প্রেম-বিরহ, বিশ্বমানবতা ও আধ্যাত্মিকতাকে কবিরা অবলম্বন করেছেন। বাংলাদেশের কবিদের মধ্যে আল মাহমুদ ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যে উজ্জ্বল এবং আন্তর্জাতিক কাতারে দাঁড়াতে সক্ষম।’ কবি হিসেবে আল মাহমুদ তাঁর নিজের আসন পাকা করে নিয়েছেন মূলত শব্দচয়ন এবং উপমার ব্যঞ্জনায়। তাঁর কবিতা তাঁকে মহৎ এবং অন্যতম করে তুলেছে। ‘বিরামপুরের যাত্রী’ কবিতায় আল মাহমুদ বলেছেন, ‘আমার নাম কবি ছাড়া আর কিছু নয়। আমি বিরামপুরের যাত্রী, পার হয়ে এসেছি কত গ্রাম, এই রামনগর অবধি কত নদী, কত গৃহস্থালি। জেনেছি নারীকে আগে, এইবার মাটির স্বাদ চাই। এই মাটি ঘামে ভেজা রক্ত সিক্ত কর্দম মাত্র নয়। এই মাটি পুরুষের বুক। এই মাটিকে কে বলে মৃত্তিকা? কত দরবেশ ঘোরাতে ঘোরাতে তারার তসবীহ দানা পাড় হয়ে চলে চলে গেছে পাথরের লৌহ কপাট। তারা ছিলেন বিরামপুরের যাত্রী, এখন আমিও।’ তিনি কঠিন সময়ের একজন পরিশ্রমী কবি তা বোঝাই যায়। তাঁর অন্তরে মাটিকে কাছে টেনে নেওয়ার আকুল বাসনা।
১৯৬৩ সালে ‘লোক লোকান্তর’ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের মধ্য দিয়ে আল মাহমুদের কাব্য পরিক্রমার শুরু এবং এই কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের পর থেকেই তিনি নন্দিত হয়ে ওঠেন। প্রবেশলগ্নে তিনি কিছুটা আত্মজৈবনিকতায় চর্চিত হয়ে নিজের ভেতর ‘আমি’র অস্তিত্ব অনুভব করেন। তাঁর ‘বিষয়ী দর্পণে আমি’ কবিতাটিতে নিজের ভেতরে শিশু আর পশুর বিরোধ নিয়ে ভাবনা ছিল, সেটিতে তিনি অনেকটা দোলায়িত হয়েছেন। পারিপার্শ্বিক অবস্থায় কবি নিজেকে পশুত্বের ভাবে আবিষ্কার করলেও পরিশেষে তিনি তা অনেকটা কাটিয়ে উঠে ক্রোধ জয় করে শিশু আর পশুর বিরোধ দেখতে পান। তিনি বলেন, ‘কখনো অসৎ থাকা অকস্মাৎ উত্তোলিত হলে/দেখি সেই বিম্বিত পশুর/দর্পিত হিংস্র চোখ আমাকেই লক্ষ্য করে জ্বলে/চিবুক লেহন করে। সে অলীক মুহূর্তের ক্রোধ জয় করে দেখি আমি/কেবলই আমার মধ্যে যেন এক শিশু আর পশুর বিরোধ।’
কাব্যচর্চা মূলত একটি নান্দনিক ও সৃজনশীল বিষয়। তাই সাহিত্যের অন্যান্য বিষয়ের চেয়ে এটি শিল্পময় ও কঠিন। এ বিষয়ে কবি আল মাহমুদ বলেছেন, কাব্য সহজ শিল্প নয়। কারণ কাব্য হলো ভাষারই অমরতার সোপানে আরোহণের বর্ণনা মাত্র। সবাই পারে না। কেউ কেউ পারে। আমরা তাদেরই একবাক্যে বলে উঠি, এই তো কবি। তিনি বলছেন, কবিতা আমার জীবন, কারণ আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ কবি। আমি তো অন্য কিছু হতে আসিনি। আমি আমার কবিসত্তার ব্যাপারে অচেতন ছিলাম। কখনোই এই সত্তাকে বিক্রি হতে দিইনি। বহুবার বলেছি, আমি কবি ছাড়া আর কিছু নই। সব কথার শেষ কথা, আমি কবি এবং শুধুই কবি।
আমরা আল মাহমুদকে জানি ‘সোনালী কাবিন’-এর কবি হিসেবে। ১৯৭৩ সালে এই কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। চট্টগ্রামে বসে লেখা এই কবিতাগুলো লেখার সময় কবি প্রচণ্ড এক ঘোরের মধ্যে ছিলেন। তিনি নিজেই বলেছেন, “আমার সবচেয়ে জনপ্রিয় কবিতা হলো ‘সোনালী কাবিন’। মাইকেল মধুসূদন দত্তের সনেট ১৪ মাত্রার। এর অনেক পরে আমি লিখলাম ‘সোনালী কাবিন’। লেখার পর মনে হয়েছিল, সনেটগুলো বাংলা সাহিত্যে আমাকে অমরতা এনে দেবে। আজ দেখি, আমার ধারণা বেঠিক নয়, আশ্চর্যজনকভাবে সফল হয়েছে সনেটগুলো। ‘সোনালী কাবিন’-এ তখন আমি খুব সাহসের সঙ্গে ‘কাবিন’ শব্দটি ব্যবহার করেছি। আমার আগে বাংলা কাব্যে এ শব্দ ব্যবহার হয়নি। এই সনেটগুচ্ছ ইন্দ্রিয় ঘনিষ্ঠতায় আবদ্ধ, নারী, নদী, দেশ, প্রকৃতি, ঐতিহ্য ও প্রেমের ভেতর দিয়ে চিরন্তন নারীর শারীরিক স্পর্শে হেঁটে যেতে যেতে শরীরহীনতায় পৌঁছে যাবার এক প্রয়াস।” ‘সোনালী কাবিন’ কাব্যগ্রন্থে আল মাহমুদের প্রেমচেতনা, ঐতিহ্য ও ইতিহাসচেতনা ঐক্যের সমতলে মিলিত হয়েছে।
সোনার দিনার নেই, দেনমোহর চেয়ো না হরিণী
যদি নাও, দিতে পারি কাবিন বিহীন হাত দুটি
ভালোবাসা দাও যদি আমি দেব আমার চুম্বন
ছলনা জানিনা বলে আর কোন ব্যবসা শিখিনি
দেহ দিলে দেহ পাবে, দেহের অধিক মূলধন
আমার তো নেই সখি, যেই পণ্যে অলংকার কিনি।
নারীকে নিজ আকাঙ্ক্ষায় রেখে তার চাওয়া আর প্রকাশের মাত্রায় ভিন্নতা এসেছে। সোনাদানা, ধন-সম্পদ, অর্থবিত্ত এখানে নিরর্থক। যৌনতা ও যৌনকাতরতা একটি সহজাত প্রবৃত্তি। এর জন্য কোনো বৈষয়িক চেতনাকে প্রাধান্য দেওয়ার কোনো কারণ নেই বলে মনে করেন কবি। লোকায়ত দার্শনিক চেতনা এই কাব্যে প্রতিনিয়ত ক্রিয়াশীল, কবিতাগুলোর মধ্যে ফ্রয়েডীয় ও অস্তিত্ববাদী চেতনা প্রকাশিত। শব্দ ব্যবহারে নিপুণ, শিল্প ও কাব্যসত্তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে প্রতিটি কবিতায়। এ কথাও সত্য যে ‘সোনালী কাবিন’-এর কবিতার অনুষঙ্গ গ্রামীণ পরিবেশ, প্রাকৃতিক সুষমা। কবির কাছে গ্রামের লোকজ প্রকৃতির মধ্যে ঘর্মাক্ত রমণীসম্ভার এবং সুবর্ণ শস্য একই চেতনার দুই সমান্তরাল রেখা।
কবিতার প্রধান অলংকার উপমা। কবিতায় এর ব্যবহার কবিতাকে করে তোলে ঐশ্বর্যমণ্ডিত। কোনো কোনো নন্দনতাত্ত্বিকের মতে উপমাই কবিত্ব। একই বাক্যে ভিন্ন জাতীয় অথচ সমান গুণবিশিষ্ট অথবা সদৃশ দুটি বস্তুর মধ্যে সাদৃশ্যের উল্লেখ দ্বারা যে সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয় তাকেই উপমা বলে। আল মাহমুদ উপমা ব্যবহারে যথেষ্ট মেধার পরিচয় দিয়েছেন। ‘কবিতা এমন’ কবিতায় তিনি কবিতাকে অনন্য পরিচয়ে পরিচিত করেছেন। ‘কবিতা তো কৈশোরের স্মৃতি/সে তো ভেসে ওঠা ম্লান আমার মায়ের মুখ/নিম ডালে বসে থাকা হলুদ পাখিটি, পাতার আগুন ঘিরে রাতজাগা ছোট ভাই বোন/আব্বার ফিরে আসা, সাইকেলের ঘণ্টাধ্বনি—রাবেয়া রাবেয়া/আমার মায়ের নামে খুলে যাওয়া দক্ষিণের ভেজানো কপাট।’ এতে তিনি চৈতন্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে কবিতাকে পাঠকের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। কবিতা যে স্বয়ম্ভু, সত্তার গভীর টানে ভেতরে আসীন। অন্তরে কবিতা যেন ছেচল্লিশে বেড়ে ওঠা অসুখী কিশোর। সেখানে তিনি আরো বলছেন, ‘পিঠার পেটের ভাগে ফুলে ওঠা তিলের সৌরভ’। কিংবা ‘কবিতা চরের পাখি, কুড়ানো হাঁসের ডিম, গন্ধভরা ঘাস, ম্লান মুখ বউটির দড়ি ছেঁড়া হারানো বাছুর’। কবিতাকে সহজ করে তোলার প্রয়াসে স্বাধীনতা কিংবা মানুষের আন্দোলনের প্রতিবাদী অবস্থার প্রতিফলন কবি দেখিয়েছেন। কিংবা ‘জিয়ল মাছের ভরা বিশাল ভাণ্ডের মতো নড়ে ওঠে বুক’। অথবা ‘গাঙের ঢেউয়ের মতো বলো কন্যা কবুল কবুল’। জীবনানন্দের মতো আল মাহমুদের উপমা ব্যবহারে চিত্রধর্মিতা পাঠকের হৃদয়ের গভীর গহ্বরে পৌঁছে যায়। আল মাহমুদের হাতে নির্মিত উপমা-উেপ্রক্ষার বহুমাত্রিকতা ও চিত্রময়তা তাঁর কবিতায় আধুনিকতার এই শিল্প উপাদান প্রতীকী চিত্রকল্পের অভাব অনেকটা পূরণ করে দিয়েছে। তাঁর কবিতায় চিত্রকল্পের চেয়ে চিত্রের পরিমাণই বেশি।
আল মাহমুদ কবিতায় ছন্দ প্রকরণের ব্যাপারে অত্যন্ত যত্নশীল ছিলেন। কিছু নবীন কবির প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘যে কবি ছন্দ জানে না, সে কিছুই জানে না।’ যদিও শেষ বয়সে প্রচুর গদ্য কবিতা লিখেছেন। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘লোক লোকান্তর’-এর কবিতার কথা বলা যায়। সেখানে ‘তিমির তীর্থ’ কবিতা অক্ষরবৃত্তের আদি রূপ নিয়ে বিন্যস্ত। মুক্তক মাত্রাবৃত্ত রচিত একটি কবিতা রয়েছে ‘স্বীকারোক্তি’, যেখানে কবি বলছেন, ‘দার্শনিকের ছাত্রের মতো আমি তো তখন/নালন্দার সে প্রকোষ্ঠে বসে মৃত দর্শন/হাতরে মরেছি, মেধাবী মনের ঢেলে ঢেলে রস/উচ্চাকাঙ্ক্ষা হৃদয়ে পুষেছি বিত্ত ও যশ।’ নিজেকে মূল্যায়নের কী অভিনব স্বীকারোক্তি!
আল মাহমুদের প্রতিটি কাব্যগ্রন্থই কাব্যবিচারের নিরিখে সফলতার দাবিদার। তাঁর সনেট, ছন্দ, উপমা, চিত্রকল্প—কবিতার প্রতিটি অনুষঙ্গের প্রয়োগে বিশিষ্টতার দাবি রাখে। তিনি সেই কবি, যিনি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যেক কবিতায় নিয়ে এসেছেন। আদি সাম্যবাদী চেতনা ও নারীর মাহাত্ম্য দিয়ে শুরু করলেও ধীরে ধীরে তিনি পরিপূর্ণ ও মহৎ কবি হয়ে উঠেছেন। প্রকৃতি, প্রেম, স্বদেশ ও লোক ঐতিহ্যের বিষয় সমাহারে তাঁর কবিতা রচনায় যে ধরনের মেধা, শ্রম ও প্রকরণের নতুনত্ব দিয়ে নিজেকে কবি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, তাতে তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন।
Publisher & Editor