মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

মিয়ানমারে জান্তা-জাতিগত গোষ্ঠী সংঘাত বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৮:৩৮, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১৪২

মিয়ানমারের জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সামরিক বাহিনী বা সরকারের সংঘাত জান্তার ক্ষমতা দখলের পর থেকে সাম্প্রতিক সময়ে আরো বিস্তৃত হচ্ছে।

জাতিগত বা বিচ্ছিন্নতাবাদী দলগুলোর সঙ্গে মিলে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ছে গণতন্ত্রকামী যোদ্ধারা।

একসময় মূলত সীমান্ত বা দূরবর্তী অঞ্চলগুলো সংঘাতপ্রবণ হলেও এখন সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলেও।

পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা, মিয়ানমারে এখন যে অবস্থা চলছে, তাতে অচিরেই দেশটি পুরোদস্তুর গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।

দেশজুড়ে সংঘাতের পরিস্থিতিতে রাজধানী নেপিডো এবং আশেপাশের শহরগুলোয় রাতে কারফিউ জারি করেছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত শহরে চলাফেরা করা যাবে না। চারজনের বেশি একত্র হওয়া যাবে না। কোনরকম বিক্ষোভ করা বা প্রকাশ্য বক্তব্যও দেওয়া যাবে না।

থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের ভিন্নমতাবলম্বীদের সংবাদপত্র ইরাওয়ার্দি জানিয়েছে, কারফিউয়ের পাশাপাশি রাজধানীতে বাঙ্কার তৈরি করছে সামরিক বাহিনী। এছাড়া পুলিশের নতুন নতুন চৌকি তৈরি করা হয়েছে।

জান্তা সরকার মঙ্গলবার এ মর্মে নতুন এক আইন জারি করেছে যে, সামাজিক মাধ্যমে সরকারবিরোধী কোনো পোস্ট লাইক বা শেয়ার করা হলেও কারাদণ্ড দেওয়া হবে।

ইরাওয়ার্দি জানিয়েছে, সহিংসতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে মিয়ানমারের শীর্ষ সাতটি সশস্ত্র জাতিগত সংগঠনের নেতাদের বুধবার বৈঠকে বসার কথা। কভিড মহামারির পর এই প্রথম এসব গোষ্ঠীর নেতারা বৈঠকে বসছেন। তাদের প্রায় ৩০ হাজার সদস্য রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

আরাকান আর্মির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বৈঠকের মূল্য লক্ষ্য নিজেদের মধ্যে একতা বাড়ানো।

বিবিসির বর্মী ভাষার সার্ভিস জানিয়েছে, এখন উত্তর রাখাইন রাজ্য, চিন রাজ্য, শান ও কাচিন এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তারা ভারী অস্ত্র ও ট্যাঙ্কের সহায়তায় অনেকগুলো শহরে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। তারা গ্রামে গ্রামে অভিযান চালাচ্ছে এবং একাধিক গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে।

রাখাইনের মংডু এবং পালেতয়া শহর ঘিরে সড়ক এবং নৌপথ অবরুদ্ধ করে রেখেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ফলে সেসব এলাকায় খাবার ও জরুরি সামগ্রীর সংকট দেখা দিয়েছে।

বিবিসির বর্মী সার্ভিস বলছে, সাধারণ মানুষের ওপর সামরিক বাহিনীর ভারী অস্ত্র ব্যবহারের মধ্য দিয়ে সামরিক সরকারের রণকৌশলে বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।  

সাম্প্রতিক হামলারগুলোর কিছু ঘটেছে সংখ্যাগরিষ্ঠ বামার জাতিগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকায়। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীতে এই জাতিগোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যাই বেশি। এদের মধ্যে থেকেও বিদ্রোহী তৎপরতা শুরু হওয়ায় মনে করা হচ্ছে, সামরিক সরকারের প্রতি তাদের মনোভাব বদলে যাচ্ছে।

ইরাওয়ার্দি জানিয়েছে, অব্যাহত যুদ্ধের মধ্যে রাশিয়া থেকে চারটি সুখই যুদ্ধ বিমান পেতে যাচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র এই খবর দিয়েছেন। ২০১৮ সালের এক চুক্তি অনুযায়ী এর আগে দুইটি যুদ্ধবিমান দিয়েছে রাশিয়া। সূত্র: বিবিসি

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor