রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ইইউর অভিন্ন আশ্রয় নীতির দ্রুত বাস্তবায়ন চায় ইতালি

প্রকাশিত: ০০:৪৫, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ |

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আশ্রয় ও অভিবাসন চুক্তি বাস্তবায়নকে ‘‘চলতি বছর অগ্রাধিকার’’ হিসাবে রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এবং অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক ও অভিবাসন বিষয়ক ইউরোপীয় কমিশনার মাগনুস ব্রুনার।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ইতালির রাজধানী রোমে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মেলোনির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মাগনুস ব্রুনার। এদিন ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্বীকৃত ‘‘নিরাপদ দেশের তালিকা’’ তৈরির কাজটি দ্রুত শেষ করা যায় কি না, তা নিয়েও কথা বলেছেন তারা।

নিজ দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নজুড়ে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে দ্রুত ও গতিশীল করতে কৌশল জোরদারে কাজ করছেন মেলোনি। পাশাপাশি, ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার করা পুরুষ অভিবাসীদের আলবেনিয়ায় নির্মাণ করা ইতালির আশ্রয়কেন্দ্রে রেখে আশ্রয় আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের প্রকল্পটিকে বাস্তব রূপ দিতেও কাজ করছেন তিনি।

আদালতের হস্তক্ষেপে ঝুলে আছে ইতালির আলবেনিয়া প্রকল্প। তবে মেলোনি আশা করছেন, সব বাধা পেরিয়ে তিনি তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন। এরমধ্যে বেশ কয়েকবার বলেছেন, আলবেনিয়া পরিকল্পনা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কার্যকর করার জন্য যা করা দরকার তাই করবেন তিনি।

• প্রয়োজন ইইউয়ের সমর্থন

ইউরোপীয় কমিশনের অস্ট্রিয়ান রক্ষণশীল দলের সদস্য ব্রুনারের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা আলাপ করেছেন মেলোনি। ইতালি সফরে এসে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি এবং শ্রমমন্ত্রী মারিনা ক্যালদেরোনের সঙ্গেও দেখা করেছেন ব্রুনার।

ইতালির লক্ষ্য হলো, ২০২৬ সালের জন্য নির্ধারিত চুক্তিটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য চাপ দেওয়া এবং ২০০৮ সালের প্রত্যাবাসন নির্দেশিকা সংশোধন করা। সম্প্রতি অনিয়মিত অভিবাসীদের প্রত্যাবাসন বাড়াতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও পুলিশ প্রধানের প্রতি কঠোর নির্দেশ দিয়েছে ইতালি সরকার। তবে, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও সমর্থন আশা করছে দেশটি।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্বীকৃত নিরাপদ দেশের তালিকা তৈরির উপরও জোর দিচ্ছেন মেলোনি। কারণ, এই তালিকাটি প্রস্তুত হলে আলেবনিয়ায় অভিবাসীদের আশ্রয় আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের কাজে অনেকটা এগিয়ে যাবে তার সরকার। নিরাপদ দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতেও আর কোনো আইনি বাধা থাকবে না।

রোম এবং তিরানার মধ্যে অভিবাসন চুক্তিটিকে সমর্থন করেছেন ইউরোপীয় কমিশনার ব্রুনার। বৈঠক শেষে মেলোনির কার্যালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে। ‘‘অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় নতুন নতুন চিন্তা’’ নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন ইইউ কমিশনার। তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে গৃহিত চুক্তিটি ‘‘একটি দুর্দান্ত ভিত্তি’’ হলেও ‘‘যথেষ্ট নয়।’’

• প্রত্যাবাসনে অভিন্ন নীতি
ব্রুনারের মতে, চুক্তিতে নেই এমন বিষয়গুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো ‘‘প্রত্যাবাসনে একটি অভিন্ন নীতি।’’ তিনি বলেছেন, কমিশন কিছু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করছে, যা শিগগিরই জানানো হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা একটি নীতি তৈরিতে কাজ করছি, যা আমি খুব তাড়াতাড়ি অর্থাৎ আগামী সপ্তাহগুলোতে উপস্থাপন করব।’’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানির সঙ্গে ব্রুনারের বৈঠকে অভিবাসীদের উৎস দেশ এবং ট্রানজিট দেশগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্ব জোরদার করার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাজানি জোর দিয়ে বলেন, এই প্রচেষ্টায় ‘‘বিশেষ করে আফ্রিকান মহাদেশে’’ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। ‘‘অভিবাসী পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনাকে রাজনৈতিক অগ্রাধিকার’’ হিসাবে নেওয়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন তারা।

ইতালীয় সরকারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পিয়ান্তেদোসি এবং ইইউ কমিশনার ‘‘উৎস দেশগুলো ছাড়াও তৃতীয় দেশে প্রত্যাবাসন পরিচালনা এবং ইইউ অঞ্চলের সব অনিয়মিত অভিবাসীদের রাখার জন্য ইউরোপীয় কেন্দ্র তৈরির’’ গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন। ইনফোমাইগ্রান্টস।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor