রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ভারত–পাকিস্তান এমনিতেই বড়, পাকিস্তানের জন্য আরও বড়

প্রকাশিত: ০০:৫৫, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ |

গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেট। সেই ক্রিকেটে আজকাল আইসিসির কোনো ইভেন্ট মানেই একটি বিষয় নিশ্চিত—ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। আইসিসি কী করে যেন দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে একই গ্রুপে ফেলার কায়দাকানুন রপ্ত করে ফেলেছে। সেটি না করে অবশ্য সংস্থাটির কোনো উপায় নেই! ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ তো তাদের জন্য সোনার ডিম পাড়া রাজহাঁস। ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই তাই প্রতিটি আইসিসি ইভেন্টে গ্রুপ পর্বে দেখা হয়ে যায় ভারত ও পাকিস্তানের। এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও আজ যেমন আবার দেখা হচ্ছে দুই দলের।

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই বাড়তি একটু উত্তেজনা। এবার সেই উত্তেজনা একটু বেশি হওয়ারই কথা। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে কম জল তো ঘোলা হয়নি এবার। ২৯ বছর পর দেশের মাটিতে কোনো আইসিসি টুর্নামেন্ট আয়োজনের স্বত্ব পাকিস্তান পেয়েছিল বেশ আগেই। তবে ‘ভারত যাবে তো পাকিস্তানে’—এই প্রশ্নটার জন্মও সেই দিন।

প্রশ্নটার উত্তরও তো সেই কবেই জানা হয়ে গেছে। ভারত যাচ্ছে না পাকিস্তানে। বরং স্বাগতিক পাকিস্তানই আরব সাগর পাড়ি দিয়ে দুবাইয়ে গেছে ভারতের বিপক্ষে খেলতে। সেটি না করে অবশ্য উপায় ছিল না দলটির। হাইব্রিড কাঠামোর টুর্নামেন্টে রাজি না হলে যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজক স্বত্ব হারানোর উপক্রম হয়েছিল।

ভারতের ম্যাচগুলো দুবাইয়ে আয়োজন করেই সেই শঙ্কা দূর করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। সেই দুবাইয়েই আজ বড় এক শঙ্কা সঙ্গী করে ভারতের বিপক্ষে খেলতে নামছে মোহাম্মদ রিজওয়ানের পাকিস্তান। করাচিতে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারা দলটি জন্য আজকের ম্যাচটি প্রায় নকআউটই হয়ে গেছে। আজ যদি পাকিস্তান হারে, আর আগামীকাল নিউজিল্যান্ড হারিয়ে দেয় বাংলাদেশকে, তাহলেই নিজের দেশের টুর্নামেন্টে দর্শক হয়ে যাবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান।

ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল ভারতের বিপক্ষে তাই জয় ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছে না পাকিস্তান। বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে ভারতের কাছে পাকিস্তানের হারাটাই ‘নিয়ম’ হলেও টুর্নামেন্টের নামটা চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বলেই আশায় বুক বাঁধতে পারে দলটি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পাঁচবারের দেখায় তিনবারই তো জিতেছে পাকিস্তান। আট বছর আগে যার সর্বশেষটিই আট দলের এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন করেছে পাকিস্তানকে।

আট বছর আগের ওভালের সেই দিনটি কি আজ ফিরবে দুবাইয়ে? তাই যদি হয়, তবে সেটি বড় অঘটন হবে বলেই মনে করেন পাকিস্তানের সাবেক ব্যাটসম্যান বাসিত আলী। দুই দলের শক্তির পার্থক্যটাই এখন এমন। বিশ্বসেরা বোলার যশপ্রীত বুমরা চোটের কারণে না থাকলেও ভারতের বোলিং আক্রমণ এখনো যথেষ্ট শক্তিশালীই। তার ওপর পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা নিজেদের হারিয়ে খুঁজছেন।

পাকিস্তান সম্প্রতি কিছু ম্যাচ হেরেছে। তবু আমরা তাদের খাটো করে দেখার ভুল করতে পারি না। ওদের দলটা খুবই ভালো। আমাদের সেরা খেলাটাই খেলতে হবে।’

বাবর-রিজওয়ানরা ফর্মে না থাকলেও ভারতীয়রা অবশ্য পাকিস্তানকে বিপজ্জনক দল মনে করেই খেলতে নামছে। সর্বশেষ দুই ওয়ানডেতেই সেঞ্চুরি পাওয়া শুবমান গিল কাল সংবাদ সম্মেলনে সেটিই মনে করিয়ে দিলেন, ‘পাকিস্তান সম্প্রতি কিছু ম্যাচ হেরেছে। তবু আমরা তাদের খাটো করে দেখার ভুল করতে পারি না। ওদের দলটা খুবই ভালো। আমাদের সেরা খেলাটাই খেলতে হবে।’

পাকিস্তানের কোচ আকিব জাভেদের আশা, তাঁর খেলোয়াড়েরা জ্বলে উঠবেন আজ, ‘প্রতিপক্ষ যেহেতু ভারত, এটা নকআউট কি নকআউট না, কোনো বিষয় নয়। এটা বিশেষ কিছুই। ব্যক্তিগত বা দলগতভাবে ছাপ রাখার জন্যই অপেক্ষায় আছি।’

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor