বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

ইউক্রেনকে পুনরায় সামরিক সহায়তা দিতে রাজি যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০১:৫০, ১২ মার্চ ২০২৫ |

ইউক্রেনকে পুনরায় সামরিক সহায়তা দিতে এবং গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করতে রাজি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার সঙ্গে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি মার্কিন প্রস্তাবে ইউক্রেন রাজি হওয়ার পরই ওয়াশিংটন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কিয়েভ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে আলোচনার পর দুই দেশে থেকে গতকাল মঙ্গলবার একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন এই প্রস্তাব নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলবে এবং বল এখন মস্কোর কোর্টে।

সৌদি আরবের জেদ্দায় আট ঘণ্টা আলোচনার পর রুবিও সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, রাশিয়া জবাব “হ্যাঁ” হবে এবং শিগগিরই তারা জানাবে, যাতে আমরা প্রস্তাবের দ্বিতীয় ধাপে যেতে পারি। দ্বিতীয় ধাপেই মূল আলোচনা হবে।’

তিন বছর আগে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ক্রিমিয়া উপদ্বীপসহ ইউক্রেনের ভূখণ্ডের এক–পঞ্চমাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। ২০১৪ সালের যুদ্ধে ক্রিমিয়া দখল করে রাশিয়া।

রুবিও বলেন, ওয়াশিংটন ‘যত দ্রুত সম্ভব’ রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তি করতে চায়। রুবিও বলেন, ‘যত দিন যাবে, তত দিন এ যুদ্ধ চলবে, মানুষ মারা যাবে, লোকজনের ওপর বোমা মারা হবে, এই যুদ্ধে উভয় পক্ষের মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাবে মস্কো কীভাবে সাড়া দেবে, এখনো তা বোঝা যাচ্ছে না। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তিনি একটি শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনায় রাজি আছেন। কিন্তু তিনি ও তাঁর কূটনীতিকেরা এর আগে বারবার বলেছেন, তাঁরা যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিপক্ষে। তাঁরা এমন একটি চুক্তি চান, যেখানে রাশিয়ার ‘দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা’ সুরক্ষিত থাকবে।

পুতিন আঞ্চলিক ছাড়ের সম্ভাবনাও নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করেই বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের যে চারটি অঞ্চল দাবি করেছে বা আংশিক নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, সেখান থেকে ইউক্রেনকে অবশ্যই সম্পূর্ণরূপে সরে যেতে হবে।

গতকাল মঙ্গলবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছে না। গতকাল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও সৌদি আরবে ছিলেন; যদিও তিনি আলোচনায় অংশ নেননি।

জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে ‘ইতিবাচক প্রস্তাব’ বলেছেন। ওই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে শুধু আকাশ ও সমুদ্রে নয়, বরং সম্মুখযুদ্ধের কথাও বলা হয়েছে। ‘রাশিয়া যত দ্রুত রাজি হবে, তত দ্রুত ওই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে,’ বলেছেন জেলেনস্কি।

রাশিয়ার কাছে নিজেদের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব উপস্থাপন করা নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেছেন, একাধিক মাধ্যমে রাশিয়ার কাছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উপস্থাপন করবে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎজ কয়েক দিনের মধ্যে রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করবেন। অন্যদিকে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এ সপ্তাহে মস্কো সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।

গতকাল ট্রাম্প বলেছেন, তিনি দ্রুত একটি যুদ্ধবিরতি প্রত্যাশা করছেন এবং এ সপ্তাহে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথাও ভাবছেন। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আশা করছি, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এ কাজ শেষ হবে।’

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor