শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

মলত্যাগের সময় কি জ্বালাপোড়া হয়?

প্রকাশিত: ০৮:৩৯, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩

বাঙালি হিসেবে আমাদের পছন্দ মসলাদার বা কষিয়ে ভুনা করা ঝাল মাছ, মাংস বা তরকারি। আবার কাজের প্রয়োজনে অনেক সময় খেতে হয় বাইরের খাবার। আর এসব খেলেই শুরু হয় বিপত্তি। যেমন কারও কারও এসব খাবার খেলে পরে মলত্যাগের সময় মলদ্বারে জ্বালাপোড়া হয়।

কারণগুলো:

১. নিয়মিত ঝাল বা বেশি তেল–মসলাযুক্ত খাবার যাঁরা খেয়ে থাকেন, তাঁদের এই সমস্যা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

২. বেশি বেশি পাতলা পায়খানা হলে মলদ্বারের চামড়া রুক্ষ হয়ে ফেটে যেতে পারে, সেখান থেকেই হতে পারে জ্বালাপোড়া।

৩. পাইলসের কারণে জ্বালাপোড়া কম হলেও, মলের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে বা মলত্যাগের পরবর্তী সময়ে রক্ত আসতে পারে।

৪. মলদ্বারে জ্বালাপোড়ার জন্য সবচেয়ে বেশি কষ্টদায়ক অ্যানাল ফিশার। মলদ্বারের ভেতরের চামড়া ফেটে গিয়ে এই ফিশার তৈরি করে এবং প্রতিবারই মলত্যাগের সময় প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হতে পারে।

৫. আইবিএস (কোনজ ডিজিজ, আলসারেটিভ কোলাইটিস) নামক ব্যাধির জন্যও পেটে এবং পরে মলত্যাগের পর জ্বালাপোড়া হতে পারে।

৬. মলত্যাগে সময় না নিয়ে তড়িঘড়ি করতে গিয়ে বেশি চাপ প্রদান করলেও জ্বালাপোড়া বাড়ে।

কষা হলে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি, এতে কষা নরম হয়।

প্রতিকার:

মলত্যাগের পর হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা কিংবা নরম টিস্যু পেপার ব্যবহার করা।

চিকিৎসকের পরামর্শমতো মলত্যাগের পরই মলদ্বারের পাশেই সংবেদনশীল ত্বকের জন্য হাইড্রোকর্টিসনসমৃদ্ধ ক্রিম বা অয়েনমেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।

হালকা কুসুম গরম পানিতে ‘সিজ বাথ’ নেওয়া যেতে পারে যা জ্বালাপোড়া–পরবর্তী ছোট ছোট ক্ষত নিরাময়ে অনেক সাহায্য করবে এবং আরামবোধ তৈরি করবে।

সব সময় চেষ্টা করতে হবে পায়খানা নরম রাখার জন্য। সে জন্য দিনে পর্যাপ্ত পানি (দুই থেকে আড়াই লিটার), ফাইবারযুক্ত শাকসবজি, ইসবগুলের ভুসি ইত্যাদি খেতে হবে।

যাঁদের বারবার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়, তাঁরা মল নরমকারক (স্টুল সফটেনার) মেডিসিন খেতে পারেন। তবে তা টানা খেলে নির্ভরশীলতা তৈরি হতে পারে এবং মাঝেমধ্যে ডায়রিয়াও হতে পারে।

প্রচুর পানি পান করতে হবে।

কখন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে:

১. বাসায় অনেক চেষ্টার পরও যখন ব্যথা ও জ্বালাপোড়া না কমে

২. মলের সঙ্গে রক্ত পড়লে বা মলত্যাগের পর রক্ত এলে

৩. এই জ্বালাপোড়ার জন্য জ্বর এলে বা মলদ্বারের বাইরের অংশ ফোলা মনে হলে

৪. জ্বালাপোড়ার সঙ্গে সঙ্গে পেটে ব্যথা হলে

৫. দ্রুত ওজন হ্রাস পেলে

৬. যখন-তখন মলত্যাগের চাহিদা তৈরি হলে, বিশেষত যেকোনো কিছু খাওয়ার পরই

এসব সমস্যার যেকোনোটি দুই থেকে তিন দিনের বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor