ঘরের মাঠই যেন অচেনা হয়ে গেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর কাছে। এখন পর্যন্ত চলতি আইপিএলে সাত ম্যাচের চারটি অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলে সবকটিতেই তারা জিতেছে। বিপরীতে ঘরের মাঠ চিন্নাস্বামীতে নেমে হেরেছে তিনটিতেই। বিরাট কোহলিদের ব্যাটিং বিপর্যয়ের দিনে গতকাল (শুক্রবার) পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ১৪ ওভারে ৯৫ রান তোলে বেঙ্গালুরু। ১১ বল এবং ৫ উইকেট হাতে রেখে পাঞ্জাব সেই লক্ষ্য পেরিয়েছে।
বৃষ্টির কারণে অবশ্য এই ম্যাচটি পুরো ভেস্তে যাওয়ারই শঙ্কা ছিল। শেষ পর্যন্ত প্রায় ৩ ঘণ্টা পর মাঠে গড়ায় খেলা। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়ে বেঙ্গালুরুর টপ-অর্ডার। একমাত্র বলার মতো রান পাওয়া টিম ডেভিডের ফিফটিতে কোনোমতে একশ’র কাছাকাছি যায় বেঙ্গালুরুর পুঁজি। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না জয়ের জন্য। উল্টো ঘরের মাঠে হ্যাটট্রিক হারে পয়েন্ট টেবিলে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন এনে দিয়েছেন কোহলি-হ্যাজলউডরা।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচটির দৈর্ঘ্য নামিয়ে আনা হয়েছিল ১৪ ওভারে। পাওয়ার প্লে–ও নেমে আসে চার ওভারে। ওই চার ওভারের মধ্যেই বেঙ্গালুরু ২৬ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বসে। প্রথম ওভারেই ওপেনার ফিল সল্টকে (৪) ফেরান আর্শদীপ সিং। তার করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারে সল্টের মতোই উড়িয়ে মারার চেষ্টায় ক্যাচ দেন বিরাট কোহলিও (১)। দলের বিপর্যয়ে লিয়াম লিভিংস্টোনও কার্যকরী হতে পারলেন না। জাভিয়ের বার্টলেটের ক্যাচ আউট হন মাত্র ৪ রান করে।
এরপর তাসের ঘরের মতো গুড়িয়ে যেতে থাকা বেঙ্গালুরু মাত্র ৪২ রানেই ৭ উইকেট হারায়। শঙ্কা জেগেছিল এদিনও তারা আইপিএলের সর্বনিম্ন রানের বিব্রতকর রেকর্ড গড়ে কি না। এর আগে ২০১৭ সালে বেঙ্গালুরুই মাত্র ৪৯ রানে গুড়িয়ে গিয়েছিল। এরপর আরও দুটি উইকেট হারালেও বেঙ্গালুরুর একপ্রান্ত আগলে রাখেন ডেভিড। মাঝে অধিনায়ক রজত পাতিদার ১৮ বলে ২৩ রান করেন। ডেভিড শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ২৬ বলে ৫টি চার ও ৩ ছক্কায় ৫০ রান করে। যাতে ভর করে ৯ উইকেটে ৯৫ রান দাঁড়ায় বেঙ্গালুরুর স্কোরবোর্ডে।
লক্ষ্য অনেকটাই নাগালে রেখে পাঞ্জাবের মূল কাজটা সেরে রেখেছিলেন বোলাররা। তাদের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আর্শদীপ, মার্কো জানসেন, যুজবেন্দ্র চাহাল ও হারপ্রিত ব্রার। পরে লক্ষ্য তাড়ায় দ্রুত পাওয়ার প্লে’র ৪ ওভারে ২ উইকেটে ৩৩ রান তোলে পাঞ্জাব। এরপর ৫২–৫৩ রানের মাঝে আরও দুই উইকেট হারালেও তাদের খুব একটা বিপদে পড়তে হয়নি। পাঞ্জাবের পক্ষে ১৯ বলে ৩টি করে চার-ছক্কায় সর্বোচ্চ ৩৩ রান আসে নেহাল ওয়াধেরার ব্যাটে। ওপেনার প্রিয়াংশ আর্য করেন ১৬ রান। বেঙ্গালুরুর জশ হ্যাজলউড ৩ ও ভুবনেশ্বর কুমার ২ উইকেট শিকার করেন।
এই জয়ের ফলে চার থেকে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে উঠে গেল পাঞ্জাব। ৭ ম্যাচে ৫ জয় নিয়ে তাদের পয়েন্ট ১০। সবার শীর্ষে থাকা দিল্লি ক্যাপিটালসের পয়েন্টও একই, তবে তারা ৫ ম্যাচ জিতেছে ৬টির মধ্যে। পাঞ্জাবের উত্থানে এক ধাপ করে অবনতি হয়েছে গুজরাট টাইটান্স ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর। যদিও দুই দলের পয়েন্ট সমান ৮ করে, গুজরাট ৬ ম্যাচে ৪ জয়ে তিনে এবং বেঙ্গালুরু ৭ ম্যাচ শেষে চারে অবস্থান করছে। তাদের সমান ম্যাচ ও জয় নিয়ে পাঁচে অবস্থান লখনৌ সুপার জায়ান্টসের।
এ ছাড়া ৬ পয়েন্ট নিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স যথাক্রমে ৬–৭ নম্বরে এবং ৪ পয়েন্ট নিয়ে যথাক্রমে অবস্থান করছে রাজস্থান রয়্যালস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও চেন্নাই সুপার কিংস।
Publisher & Editor